ভারতবাসী বৈদেশিক শত্রুর হাত থেকে আত্মরক্ষার সহজ এবং কার্য্যকারী ব্যবস্থা করতে পারে। ভারতবর্ষের অভ্যন্তরে বিভিন্ন রাজ্য এবং প্রদেশগুলির মধ্যে প্রকৃতিরচিত সেরূপ কোন দুর্ভেদ্য ব্যবধান নাই। অবশ্য উত্তর-ভারত অথবা হিন্দুস্থান এবং দাক্ষিণাত্যের বিস্তীর্ণ ত্রিকোণকে বিভক্ত ক’রে বিন্ধ্যাচলের পর্বতমালা দাড়িয়ে আছে; এবং সেই জন্যই ভারতবর্ষের এই দুই প্রধান অংশের মধ্যে যাওয়া-আসা কতকটা কষ্টসাধ্য। তবে প্রকৃতি-রচিত এই প্রাকারশ্রেণীর মধ্যে অনেক ফাঁক এবং ফাটল র’য়ে গেছে; তাই রামচন্দ্রের যুগ থেকে ইংরেজদের আমল পর্য্যন্ত বিন্ধ্যাচলের প্রাকার কোন দিগ্বিজয়ীর পথ রোধ করতে কিম্বা তার অভিযান ব্যর্থ করতে সমর্থ হয়নি। অনেকে বলতে পারেন, খাইবার-গিরিবর্ত্মও তো বৈদেশিক শক্রকে ঠেকিয়ে রাখতে পারেনি। আর্য্যদের সেই সুদূর যুগ থেকে আহম্মদ শাহ আবদালীর যুগ পর্য্যন্ত এই খাইবার-গিরিবর্ত্ম অতিক্রম ক’রেই বৈদেশিক শত্রু ভারতবর্ষের সমতল ভূমিতে প্রবেশ করেছে; সে কথা অবশ্য অস্বীকার করবার উপায় নাই। তবে এ কথা অন্ততঃ আমরা সহজে বলতে পারি যে, ভারতবাসীর পক্ষে বৈদেশিক শক্রকে খাইবার-গিরিবর্ত্মের মুখে ঠেকিয়ে রাখা ভারতের অন্য কোন স্থানে তার গতিরোধের চেয়ে অনেকখানি সহজসাধ্য কাজ। তারপর ভারতবর্ষের বিভিন্ন অংশের লোকদের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্যের দিকে লক্ষ্য করলে সত্যই মনে হয়, প্রকৃতি দেবী যেন ভারত-রক্ষার সমস্যার কথা ভেবেই দেশের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে সেই সব দুর্দ্ধর্ষ যুদ্ধকুশল জাতিকে স্থাপিত করেছেন - যাদের বাহুবল প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে এদেশের রক্ষাকবচ হ’য়ে আছে। সব দিক্ থেকে বিচার করলে, মনে এ-ধারণা অতি স্পষ্ট হ’য়ে ওঠে যে, আত্মরক্ষার প্রাকৃতিক কুশলতার দিক থেকে ভারতবর্ষ এক অখণ্ড দেশ। সুতরাং রাষ্ট্রের হিসাবে
পাতা:ভবিষ্যতের বাঙালী.djvu/৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভবিষ্যতের বাঙালী
৬