পাতা:ভানুসিংহের পত্রাবলী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভানুসিংহের পত্রাবলী
৪৭

তা’র মধ্যে যে-ভূমা আছে, হিমালয়-পর্ব্বতের প্রকাণ্ড আয়তনের মধ্যে তা নেই। তেম্‌নি আমাদের আত্মা ছোটো-দেহ, ছোটো-মন, ছোটো-সব প্রবৃত্তি দিয়ে ঘেরা, অনেক সময় তাকে যেন দেখ্‌তেই পাওয়া যায় না। কিন্তু তবু তা’র মধ্যেই সেই ভূমা আছেন। সেইজন্যেই তো এক দিকে আমাদের ক্ষুধা-তৃষ্ণা, আমাদের রাগ-বিরাগ যখন আমাদের কাছে অন্ন-বস্ত্র ও অন্য হাজার-রকম বাসনার জিনিষের জন্যে দরবার ক’র্‌চে, সেই মুহুর্ত্তেই এই প্রবৃত্তির দাস, এই বাসনার বন্দী, বিশ্বের সমস্ত সম্পদ পায়ের নীচে ফেলে, উঠে দাঁড়িয়ে প্রার্থনা ক’রেচে,—অসত্য থেকে আমাকে সত্যে নিয়ে যাও, যা অসীম একেবারে তাকেই চাই। এত বড়ো চাওয়ার জোর এতটুকুর মধ্যে আছে কোথায়? সে-জোর যদি না থাক তো, তবে এত বড়ো কথা তা’র মুখ দিয়ে বেরোতো কেমন ক’রে? এ-কথার কোনো মানে সে বুঝ্‌তো কী করে? আশ্চর্য্য ব্যাপার হ’চ্চে এই-যে, মানবের আত্মা যা নিয়ে দেখ্‌চে, শুন্‌চে, ছুঁচ্চে, খাওয়া-পরা ক’র্‌চে, তাকেই চরম সত্য ব’ল্‌তে চাচ্চে না;— যাকে চোখে দেখ্‌লো না, হাতে পেলো না, তাকেই ব’ল্‌চে সত্য। তা’র একটি মাত্র কারণ, ছোটোর মধ্যেই