পাতা:ভারতকোষ - প্রথম খণ্ড.pdf/১১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

________________

অভিকর্ষ ধরাপৃষ্ঠ হইতে বিলুপ্ত একটি পার্শ্বনাথের মূতিও তিনি উদ্ধার। করেন এই রচনার মহিমায়। অভয়দেবসূরির বহু শিষ্য ছিল। তাহার মধ্যে ১১০৭ খ্ৰীষ্টাব্দে রচিত ‘জীব-সমাস’ নামক গ্রন্থের লেখক মলধারী হেমচন্দ্র প্রধানও প্রসিদ্ধ। অভয়দেবসুরি প্রধানতঃ জৈন আগমশাস্ত্রের টীকা লিথিয়াছেন। তাহার লিখিত ‘অঙ্গ’ গ্রন্থের টীকার মধ্যে স্থানাঙ্গ, ভগবতীব্যাখ্যা প্রজ্ঞপ্তি, জ্ঞাতৃধর্ম কথা, উপাসকদশাস্ত্র, অন্তদ-দশাস্ত্র এবং প্রশ্ন ব্যাকরণের টীকা সমধিক প্রসিদ্ধ। ইহা ছাড়া ‘সম্মতিতকপ্রকরণ’-এর টীকাও তিনি লিখিয়াছিলেন। হরিভদ্রের ‘অষ্টক প্রকরণ’ গ্রন্থের ‘অষ্টকবৃত্তি’ নামে একখানি টাকাও তিনি প্রণয়ন করিয়াছিলেন। পরবর্তী কালে দেবগুপ্ত নামে পরিচিত জিনচন্দ্রগণীনের ১৪টি প্রাকৃত গাথায় লিখিত ‘নবতত্ত্ব-প্রকরণ নামে একটি জৈন নবপদার্থের পুস্তক আছে। অভয়দেব ১০৬৩ খ্ৰীষ্টাব্দে উপরি-উক্ত ১৪টি শ্লোকের উপরও একটি টীকা লিখিয়াছিলেন। উপরি-উক্ত সকল টীকাই মুদ্রিত। হইয়াছে। সত্যরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় অভিকর্ষ পৃথিবীর একটি অদৃশ্য শক্তি চতুর্দিকের যাবতীয় পদার্থকেই তাহার কেন্দ্রের দিকে টানিতেছে। বোঁটা খসিয়া। গেলে এইজন্যই গাছের ফল উপরের দিকে না উঠিয়া মাটিতে পড়ে। উপরের দিকে ঢিল ছুড়িলে কিছুদূর । গিয়াই আবার মাটিতে ফিরিয়া আসে। উচু জায়গা হইতে পড়িয়া গেলে আমরা মাটিতেই পড়ি, উপরে উঠিয়া যাই না। পৃথিবীর এই যে শক্তি, যাহা অদৃশ্য থাকিয়াও সব সময় আমাদের নীচের দিকে টানিতেছে, তাহাকে অভিকর্ষ বা মাধ্যাকর্ষণ শক্তি বলা হয়। নিউটন প্রমাণ করিয়া দেখাইয়াছেন যে, বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের যাবতীয় বস্তুই পরস্পর পরস্পরকে আকর্ষণ করিতেছে ( মহাবিশ্বের এই আকর্ষণকে বলা হয় মহাকর্ষ, আর চতুদিকের বস্তুর উপর পৃথিবীর আকর্ষণকে বলা হয় অভিকর্ষ )। দুইটি বস্তুর পরিমাণ অর্থাৎ ভর এবং তাহাদের পারস্পরিক দূরত্বের উপর এই আকর্ষণশক্তির তারতম্য নির্ভর করে। বস্তু দুইটির পরিমাণ বৃদ্ধি পাইলে আকর্ষণশক্তির জোর বৃদ্ধি পাইবে। আবার উভয়ের মধ্যে দূরত্ব বৃদ্ধি পাইলে আকর্ষণের শক্তি হ্রাস পাইবে। যে পদার্থের বস্তু-পরিমাণ যত বেশি, পৃথিবী কেন্দ্রের দিকে তাহাকে তত বেশি জোরে আকর্ষণ করে। কাজেই আমাদের কাছে কোনও জিনিস ভারি এবং কোনও জিনিস হালকা বলিয়া মনে হয়। পৃথিবীর অভিকর্ষ না থাকিলে কোনও জিনিসের ওজন

১১

________________

অভিধম্মকোশ অনুভূত হইত না। আবার কোনও বস্তুকে যদি পৃথিবী হইতে অনেক উচুতে লইয়া যাওয়া যায়, তাহা হইলে সেখানে সেই বস্তুটির উপর পৃথিবীর আকর্ষণের মাত্রা অনেকটা হ্রাস পাইবে। কেন্দ্র হইতে ভূপৃষ্ঠের দূরত্ব প্রায় ৬৪৪০ কিলােমিটার ( ৪ ০ ০ ০ মাইল )। ভূপৃষ্ঠ হইতে যদি কোনও বস্তুকে আরও ৬৪ ৪০ কিলােমিটার উপরে তােলা যায়, তবে সেখানে তাহার ওজন ভূপৃষ্ঠের ওজনের তুলনায় চার ভাগের এক ভাগ হইয়া যাইবে ; অর্থাৎ পৃথিবীর উপর যদি আমাদের দেহের ওজন হয় প্রায় ৫৬ | কিলােগ্রাম ( দেড় মণ ), তবে ৬৪৪০ কিলােমিটার উপরে | আমাদের ওজন হইবে মাত্র ১৪ কিলােগ্রাম (১৫ সের )। ১৪৪৯০ কিলােমিটার (৯০ ০ ০ মাইল) উপরে উঠিলে সেখানে ওজন হইবে এখানকার প্রায় দশ ভাগের একভাগ। এই ভাবে ক্রমশঃ আরও অনেক উচুতে উঠিতে পারিলে একসময়ে পৃথিবীর আকর্ষণশক্তির প্রভাব অনুভূত হইবে না। হালকাই হউক, কি ভারিই হউক— এই আকর্ষণ| শক্তি প্রত্যেকটি জিনিসকেই সমানভাবে মাটির দিকে টানিয়া আনিতে চেষ্টা করে। একটা হালকা জিনিস ও একটা ভারি জিনিসকে উপর হইতে একসঙ্গে ছাড়িয়া দিলে যদি বাতাস বা অন্য কিছুর বাধা না পায়, তবে একই সঙ্গে মাটিতে পড়িবে। কোনও কিছুর উপরেই এই আকর্ষণশক্তির পক্ষপাতিত্ব নাই।। পৃথিবীর আকর্ষণের ফলে যেমন পদার্থের ওজন অনুভূত হয়, তেমনই আবার উচ্চস্থান হইতে পতনের সময় তাহার গতিবেগও বৃদ্ধি পাইয়া থাকে। এই গতিবেগ বৃদ্ধির হার সব কিছুর পক্ষে একই রকম। উঁচু জায়গা হইতে একটা বল ছাড়িয়া দিলে এক সেকেণ্ড পরে তাহার গতিবেগ হইবে সেকেণ্ডে ৯৬০ সেন্টিমিটার ( ৩২ ফুট ), দুই সেকেণ্ড পরে তাহার গতিবেগ হইবে সেকেণ্ডে ১৯২০ সেন্টিমিটার ( ৬৪ ফুট ), তিন সেকেণ্ড পরে এই গতিবেগ দাড়াইবে সেকেণ্ডে ২৮৮০ সেন্টিমিটার ( ৯৬ ফুট )। অভিকর্ষের টানে প্রতি সেকেণ্ডে ৯৬০ সেন্টিমিটার করিয়া গতিবেগ বৃদ্ধি পাইবে। নীচের দিকে নামিবার সময় পদার্থের গতিবেগ যেমন ভাবে বৃদ্ধি পায়, তেমনই আবার উপরের দিকে যত বেশি জোরে উঠিবার চেষ্টা করা যায়, পৃথিবীর আকর্ষণও তত বেশি অনুভূত হয়। গোপালচন্দ্র ভট্টাচার্য

অভিচার ষট্‌কর্ম দ্র। | অভিধমকোশ বিখ্যাত বৌদ্ধ পণ্ডিত ও দার্শনিক বস্তুবন্ধু | এই অমূল্য গ্রন্থের রচয়িতা। ৬০০ কারিকায় রচিত
৯৩