পাতা:ভারতকোষ - প্রথম খণ্ড.pdf/৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
অন্তঃস্রাবী গ্রন্থি

পুং-জননকোষ ও ডিম্বাশয় ডিম্বাণু উৎপাদন করে। অপর। দিকে আবার এই তিনটি গ্রন্থি অন্তঃস্রাবী গ্রন্থি হিসাবেও কাজ করে। অগ্ন্যাশয় রক্তের মধ্যে দুইটি হর্মোন ক্ষরণ করেই লিন (insulin) ও কাগন (glucagon)। ইহাদের ক্ষরণ প্রধানতঃ রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণের উপরেই নির্ভর করে। রক্তে গ্লুকোজের মাত্রাধিক্য ঘটিলে অগ্ন্যাশয় উদ্দীপিত হইয়া ইনসুলিনের ক্ষরণ বৃদ্ধি করে এবং রক্তে গ্লুকোজ কমিয়া গেলে গ্লকাগন ক্ষরিত হইতে পারে। আকস্মিক অবস্থায় ইনসুলিনের ক্ষরণ সম্ভবতঃ সমব্যথী স্নায়ুর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। শুক্রাশয় ক্ষরণ করে পুংযৌন হর্মোন টেস্টোস্টেরোন (testosterone) আর ডিম্বাশয় ক্ষরণ করে দুইটি স্ত্রী-যৌন হর্মোন— ঈস্ট্রোজেন (estrogen) ও প্রােজেস্টেরােন (progesterone)। এই দুইটি গ্রন্থির হর্মোন-ক্ষরণ পিটুইটারির যৌনাঙ্গ-উদ্দীপক হর্মোনগুলির উপর নির্ভর করে। এই গ্রন্থিদ্বয়ের ক্ষরণ বয়ঃপ্রাপ্তির সময় শুরু হয় ও বার্ধক্যের আগমনে হ্রাস পায়।

ইহা ছাড়া বক্ষাস্থির (steinum) নিকট থাইমাস (thymus) ও মস্তিষ্কে পিনিয়াল গ্রন্থিও অন্তঃস্রাবী গ্রন্থি বলিয়া বােধ হয়। ইহাদের হর্মোন সম্বন্ধে বিশেষ কিছুই জানা নাই। তবে থাইমাস গ্রন্থি স্বাভাবিক অবস্থায় প্রায় বয়ঃপ্রাপ্তির সময় পর্যন্ত আয়তনে বৃদ্ধি পাইতে থাকে এবং তাহার পর ইহার আয়তন হ্রাস পায়।

অধিকাংশ অন্তঃস্রাবী গ্রন্থিই পরস্পরের সহিত ঘনিষ্ঠ ভাবে সম্পর্কিত। থাইরয়েড, অ্যাড্রিন্যাল ও যৌন-গ্রন্থিগুলির উপর পিটুইটারির প্রভাবের কথা পূর্বেই বলা হইয়াছে। পক্ষান্তরে, এই গ্রন্থিগুলিও পিটুইটারিকে প্রভাবান্বিত করে। রক্তে থাইরয়েডের হর্মোন থাইরসিনের মাত্রাধিক্য ঘটিলে পিটুইটারি হইতে থাইরয়েড-উদ্দীপক হর্মোনের ক্ষরণ কমিয়া যায়। অনুরূপভাবে রক্তে অ্যাড্রিন্যালের বহিরাংশের কর্টিকয়েড হর্মোনগুলির আধিক্য হইলে পিটুইটারির অ্যাড্রিন্যাল-কর্টেক্স্-উদ্দীপক হর্মোনের ক্ষরণ হ্রাস পায়। আবার রক্তে ঈস্ট্রোজেনের আধিক্যে পিটুইটারির যৌনাঙ্গউদ্দীপক হর্মোনের ক্ষরণ প্রভাবিত হয়।

অন্তঃস্রাবী গ্রন্থিগুলির মধ্যে পিটুইটারি, থাইরয়েড, প্যারাথাইরয়েড, অগ্ন্যাশয় ও অ্যাড্রিন্যাল গ্রন্থির বহিরাংশ প্রাণধারণের পক্ষে অবশ্য প্রয়ােজনীয়। কিন্তু অ্যাড্রিন্যাল গ্রন্থির কেন্দ্রীয় অংশ, শুক্রাশয় ও ডিম্বাশয় স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য প্রয়ােজনীয় হইলেও জীবনধারণের পক্ষে অবশ্য প্রয়ােজনীয় নহে। এইগুলিকে নষ্ট করিয়া দিলে দেহের স্বাভাবিক কার্যাবলী ও স্বাস্থ্য অধিক বিপর্যস্ত হয়। যেমন, শুক্রাশয় বা ডিম্বাশয় কাটিয়া বাদ
দিলে জীবের প্রজননশক্তি ও যৌনবােধ লােপ পায় এবং অ্যাড্রিন্যাল গ্রন্থির কেন্দ্রীয় অংশ নষ্ট করিয়া দিলে উত্তেজনা বা আকস্মিক বিপদে দেহ প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে অসহায় হইয়া পড়ে। এ ক্ষেত্রে উল্লেখযােগ্য যে, ভারবহন বা মাংসউৎপাদনের কার্যে উপযােগিতা বৃদ্ধি করিবার জন্য পালিত গো-মহিষ, ছাগল, কুকুট প্রভৃতির দেহ হইতে শুক্রাশয়, কাটিয়া বাদ দেওয়ার পদ্ধতি প্রাচীন কাল হইতেই প্রচলিত আছে। মধ্যযুগে ক্রীতদাসদিগের দেহ হইতেও শুক্রাশয় বাদ দিয়া তাহাদের ক্লীবে পরিণত করা হইত ও ‘খােজা প্রহরীরূপে মুসলমান হারেমে নিযুক্ত করা হইত।

স্নায়ুতন্ত্রের সহিত সহযােগিতায় কার্য করিয়া অন্তঃস্রাবী গ্রন্থিগুলি কেবল যে জীবের দৈহিক অবস্থাই নিয়ন্ত্রণ করে, তাহা নহে- ইহারা মানসিক চিন্তা ও বােধকেও বহুল পরিমাণে প্রভাবান্বিত করে। হর্মোন’ ভ্র।

দেবজ্যোতি দাস


অস্তিয়ােক মৌর্য সম্রাট অশোক তাহার শিলালিপিতে উল্লেখ করিয়াছেন যে, তিনি যবনরাজ অন্তিয়ােক এবং অন্য চারিজন ( যবন ) রাজার রাজ্যে ( বৌদ্ধ ) ধর্ম প্রচার করিয়াছিলেন। এই অস্তিয়ােক এশিয়ার পশ্চিমভাগে | অবস্থিত সিরিয়া রাজ্যের রাজা দ্বিতীয় অন্তিয়ােক ( Antiochus II Theos )। ইনি খ্ৰীষ্টপূর্ব ২৬১ হইতে ২৪৬ অব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন। সুপ্রসিদ্ধ আলেকজাণ্ডারের সেনাপতি সেলিউকাস প্রতিষ্ঠিত সিরিয়া দেশের রাজগণের সহিত মৌর্য রাজগণের সদ্ভাব ছিল এবং দূত-বিনিময় হইত।

রমেশচন্দ্র মজুমদার
অন্ত্যেষ্টি শেষ যজ্ঞ অথবা অন্তিম সংস্কার। বর্তমানে মুখ্যতঃ শবদাহ। দাহের পূর্বে ঘৃত মাখাইয়া শবদেহ স্নান ও চন্দনচর্চিত করাইয়া উহার দুই কর্ণ, দুই নাসারন্ধ্র, দুই চক্ষু ও মুখে সাত খণ্ড সােনা বা কঁাসার টুকরা দিয়া মৃতের উদ্দেশে পিণ্ডদান করিতে হয়। শব চিতায় স্থাপন করার। পর উহা তিনবার প্রদক্ষিণ করিয়া পুত্র কন্যা বা কোনও ঘনিষ্ঠ আত্মীয় তাহার মুখে অগ্নিসংযােগ করেন। দাহকার্য শেষ হইলে চিতাগ্নিতে এক এক করিয়া সাত টুকরা ছােট ছােট কাঠ দিয়া কুঠারের দ্বারা জ্বলন্ত চিতার উপর সাতবার আঘাত করিতে হয়। তাহার পর যিনি মুখাগ্নি করিয়াছেন তিনি সাত কলসী ও অন্য সকলে এক এক কলসী জলের দ্বারা চিতার আগুন নিভাইয়া দেন। চিতাস্থানে একটি জলপূর্ণ কলসী রাখিয়া পিছন
৫৮