পাতা:ভারতবর্ষে.djvu/১০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
কলিকাতা, দার্জ্জিলিং ও সিংহল।

সম্পাদক কোন পাদ্রির লেখনী হইতে নিঃসৃত। এরূপ কতকগুলি ছাঁচ-গ্রাহী আর্টিষ্ট দেখিতে পাওয়া যায় যাহারা নিজত্বসম্পন্ন কোন প্রতিভাশালী ব্যক্তির সহিত কিছুকাল কথা কহিয়াই তাহার ধরণ-ধারণ, হাব-ভাব, কেতার অবিকল নকল তুলিতে পারে। কারলাইল ইঙ্গ-স্যাক্‌সন জাতির উল্লেখ করিয়া বলিয়াছেন—উহারা ‘পাষাণ-গঠিত জাতি’। পাষাণ-গঠিত জাতিই বটে; হিন্দুর কর্দ্দমছাঁচে স্বকীয় পাষাণ-মূর্ত্তির ছাপ বসাইয়া উহারা নিজে অবিকৃত রহিয়াছে, অথচ আপনাদিগের প্রত্যেক খোঁচ্‌ খাঁচ্‌ সেই হিন্দুর সুনম্য ছাঁচে মুদ্রিত করিয়া দিয়াছে।”

 ভারতবর্ষের কতিপয় প্রধান নগরের স্বরূপ-লক্ষণ গ্রন্থকার কেমন বেশ সংক্ষেপে ব্যক্ত করিয়াছেন। তিনি বলেন—“কলিকাতা ইংরাজের ভারতবর্ষ; বারাণসী ব্রাহ্মণের ভারতবর্ষ; আগ্রা মোগলদিগের ভারতবর্ষ; আর জয়পুর রাজাদিগের ভারতবর্ষ— উপন্যাসের ভারতবর্ষ।”

 ইলোরা-গুহায় মহাদেবের মূর্ত্তি দেখিয়া গ্রন্থকার হিন্দুধর্ম্ম-সম্বন্ধে নিজ মতামত ব্যক্ত করিয়াছেন। তিনি বলেন;–“সংহার-শক্তি ও সৃজন-শক্তি ব্রাহ্মণদিগের মতে একই শক্তির বিভিন্ন আকারমাত্র; তাঁহাদের সংহারের ও সৃজনের দেবতা পৃথক্‌ নহে, একই। ইহাই ব্রাহ্মণদের মহা নূতনত্ব। অন্যান্য জাতি মনুষ্যভাবে দেবতাকে দেখিতে গিয়া—ভালমন্দ, সুন্দর কুৎসিত—এইরূপ বিভিন্ন পৃথক পৃথক্‌ আপেক্ষিক লক্ষণে আপনাদিগের দেবতাদিগকে লক্ষণাক্রান্ত করিয়াছেন। কিন্তু হিন্দুরা অসীমের দিক্ দিয়া দেখিয়াছেন বলিয়া তাঁহাদের নিকট দেবও নাই দানবও নাই, পরন্তু এক নিরপেক্ষ অসীম শক্তি বর্তমান; তিনিই সৃজন করেন, তিনিই সংহার করেন—তিনিই একমাত্র ‘তৎসৎ’। আরও যথাযথরূপে