সম্মিলনকে আমরা এক হিন্দুজাতি বলিতেছি। এ বৈচিত্র্যের মধ্যেও একটা ঐক্যস্থল আছে। ভারতীয় ধর্ম্মের সূত্রস্থানে অদ্বৈতবাদ প্রথমে সুস্পষ্টরূপে লক্ষিত হয়; তাহার পর ত্রিশ শতাব্দী কাল ধরিয়া, জিত, ও বিজেতাদের ধর্ম্মমত মিশ্রিত হইয়া গিয়া সেই অদ্বৈতবাদ একটু তিমিরাচ্ছন্ন হইয়াছে; আজিকার দিনে, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের বিভিন্ন নৈতিক ও দার্শনিক মতের জাল হিন্দুধর্ম্মের মধ্যে বিস্তীর্ণ হইয়া এরূপ প্রকাণ্ড আকার ধারণ করিয়াছে যে, উহার শৃঙ্খল আর খুঁজিয়া পাওয়া ভার। এইপ্রকার, ভারতের বিস্তীর্ণ কর্দ্দমময় গঙ্গানদীও বিভিন্ন স্রোতস্বিনীর চিরপ্রবাহী স্রোতে পরিপুষ্ট হইয়া, রাশি-রাশি উদ্ভিজ্জাবশেষের ভারে আক্রান্ত হইয়া—বন, জঙ্গল, পুরাতন জনপদ, আধুনিক ইংরাজ-নগর প্রভৃতির মধ্য দিয়া অনিশ্চিত গতিতে আঁকিয়া বাঁকিয়া চলিয়াছে; এবং বিস্তৃত ভূমি প্লাবিত ও উর্ব্বর করিয়া, নানা শাখাপ্রশাখা বিস্তার করতঃ সাগরে মিলাইয়া গিয়াছে।” পাঠককে মূলগ্রন্থ পড়িতে অনুরোধ করি—তাহাতে যে তিনি আমোদ ও উপদেশ একাধারে প্রাপ্ত হইবেন ইহা মুক্তকণ্ঠে বলা যাইতে পারে।
(২)
ফরাসী পর্যটক আন্দ্রে শেভ্রিয়োঁ সিংহলদ্বীপ প্রথম যখন জাহাজ হইতে দেখেন তখন তাঁহার কিরূপ মনে হইয়াছিল তাহা বর্ণনা করিয়াছেন। “গত কল্য কোইট্’-খেলা দুই বাজি হইল, তাহার মধ্যে একটি ছোট ইংরাজ বালিকা,—মুখের রঙ ফ্যাঁকাসে ও স্বভাব একগুঁয়ে,—কাপ্তেনের নিকট এই অঙ্গীকার করিল, যদি আজ সন্ধ্যার সময় আমরা কলম্বো নগরে