নামিতেছিলেন। এই কর্ম্মচারীকে অভ্যর্থনা করিবার জন্য পণ্ডিচারির দেশীয় ও যুরোপীয় তাবৎ সম্ভ্রান্ত লোক সমবেত হইয়াছিল। আমাদের দেশে গবর্ণর প্রভৃতিকে অভ্যর্থনা করিবার সময় যেরূপ সৈন্যশ্রেণী রাজপথে দাঁড় করাইয়া দিয়া, বিজয়তোরণ নির্ম্মাণ করিয়া মহাসমারোহে নানা অনুষ্ঠান করা হয়, এখানেও তৎসমস্ত অনুষ্ঠিত হইয়াছিল—তবে, পণ্ডিচারিতে ফরাসী গবর্ণমেণ্টের তিন শত মাত্র সৈন্য। এই তিন শত সৈন্য লইয়া অলীক যুদ্ধ প্রদর্শন করা নিতান্ত ছেলেখেলা বলিয়া মনে হয়। গ্রন্থকার বিদ্রূপের ভাবে বলেন যে, এই সমারোহের সময়ে ঐ সকল সৈনিকেরা বন্দুকের গুঁতার দ্বারা দেশীয় লোকদিগকে সরাইয়া দিতে ও য়ুরোপীয় দেখিলেই সসম্ভ্রমে পথ ছাড়িয়া দিতে ক্রটি করে নাই। সেই নবাগত উচ্চপদস্থ কর্ম্মচারীর নিকট পণ্ডিচারির বহু সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিদিগের দস্তুর-মত পরিচয় দান এবং রাজকর্ম্মচারীদিগের সস্মিত বদনমণ্ডলের ভাব প্রভৃতি গ্রন্থকার বর্ণনা করিয়াছেন। যখন সেই পরিচয়দানের অনুষ্ঠান হইতেছিল, মহা জাঁকজমক করিয়া একজন দেশীয় সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি নবাগত কর্ম্মচারীর নিকট আসিয়া মস্তক নত করিল। ইঁহার হস্তে একটি রৌপ্য-দণ্ড ছিল। পূর্ব্বকালের ইংরাজ-ফরাসীযুদ্ধে, ফরাসীদিগের যখন কামানের গোল ফুরাইয়া যায়, তখন এই ব্যক্তির পূর্ব্বপুরুষেরা রাশি-রাশি খনিজ স্বর্ণপিণ্ড গোলারূপে ব্যবহার করিবার জন্য ফরাসীদিগকে দান করিয়াছিল। তাই তাহার প্রতিদান-স্বরূপ ফরাসী গবর্ণমেণ্ট তাহার সম্মানার্থ একটি রৌপ্য-দণ্ড বক্সিস্ করেন। ইহা নিঃস্বার্থ রাজভক্তির একটি জলন্ত দৃষ্টান্ত।
গ্রন্থকার এদেশীয় স্ত্রীলোকদের গঠন-সম্বন্ধে এইরূপ বলেন। “এই সকল স্ত্রীলোক সাদাসিধা অথচ জমকাল পরিচ্ছদ পরিধান