পাতা:ভারতবর্ষে.djvu/২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



২০
ভারতবর্ষে।

লইয়া চলিতেছিল, সেই গভীর অন্ধকার রাত্রে আমিও অদৃশ্যভাবে তাহদের সঙ্গে মিশিয়া গেলাম। কাঁসর ঘণ্টার রবে নগর পরিপূর্ণ—তা’ ছাড়া আর কোন শব্দ শোনা যায় না। সেই কৃষ্ণ সরোবরের ধারে, মন্দিরের বৃহৎ দ্বারের নীচে সেই বিকট মূর্ত্তিগুলি চিরজাগ্রত, এবং মন্দিরস্থিত উদ্যানের প্রবেশ-পথে পুরোহিতেরা নিস্তব্ধভাবে দণ্ডায়মান ও কোনপ্রকার অঙ্গভঙ্গী না করিয়া নীরবে ভক্তদিগের পুষ্পাঞ্জলি গ্রহণ করিতেছে। একটা রৌপ্যময় গরাদের নীচে দিয়া আমরা চলিলাম এবং তৎপরেই একটা ছায়াময় বড় দালানের মধ্যে গিয়া পড়িলাম। সেখানে ছোট ছোট পবিত্র দীপসকল একপ্রকার রহস্যময় অস্ফুট আলোক বিকাশ করিতেছে। শত শত ধূপাধার হইতে সুগন্ধী নীলাভ ধূমরাশি উর্দ্ধে প্রসারিত হইয়া স্থিরভাবে উপরে ভাসিতেছে। এই গুরুভার, নিদ্রাকর্ষক ধূপধূমের প্রভাবে সমস্ত দৃশ্যটি কেমন একপ্রকার অবাস্তব অলৌকিক আকার ধারণ করিয়াছে। অন্ধকারের মধ্যে বুদ্ধদেবের বিবিধ মূর্ত্তি হইতে ছায়া পড়িয়া ইতস্ততঃ অৰ্দ্ধস্ফুট ভাবে দেখা যাইতেছে। কোন বুদ্ধমূর্ত্তি শয়ান, কোন বুদ্ধমূর্ত্তি আসীন—সকলের তলদেশে পুষ্পরাশি বিকীর্ণ। আমরা একটা অন্ধকারাচ্ছন্ন সিঁড়ি দিয়া উঠিলাম, তাহার ধারসকল অগ্নিকুণ্ড-নিক্ষিপ্ত কোলাহলময় দানবদৈত্যের চিত্রে চিত্রিত। উপরে একটি রৌপ্যময় গরাদের পশ্চাতে পুরোহিতেরা দণ্ডায়মান—ভক্তেরা তাহাদের পুষ্পোপহার একটি বেদীর উপর রাখিতেছে, আর সেই পুষ্পোপহার পুরোহিতেরা গ্রহণ করিতেছে। সেই নীরব ভক্তদলের সম্মুখে, একটি সুন্দর যুবক পুষ্পোপহার হস্তে স্থিরভাবে দণ্ডায়মান। মূর্ত্তির সম্মুখে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করিয়া সে অনেকবার নতশির হইল। এইবার অর্দ্ধনত হইয়া বক্ষের উপর হস্তযুগল স্থাপন করিয়া খানিকটা স্থির-