পাতা:ভারতবর্ষে.djvu/৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



ব্রাহ্মণ্যশাস্ত্রের মায়াবাদ ও অদ্বৈতবাদ।
৩৩

সম্পাদন করিতেছেন, সেই আত্মা পুরুষ ও নহে, স্ত্রীও নহে এবং ক্লীবও নহে।’ সেই আত্মা যিনি কোটি কোটি আকার ধারণ করিতেছেন, যাঁহা হইতে সকল পদার্থ নিঃসৃত হইয়া আবার তাঁহাতেই গমন করে, যিনি নিজে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের ন্যায় অস্থায়ী, যিনি কোটি কোটি যুগের পর—যাহা তাঁহার এক দিন—‘অচ্ছায়, অদেহ, অবর্ণ’ নির্গুণ পরব্রহ্মে পুনর্ব্বার লয় প্রাপ্ত হন। এই জগৎ এক প্রকাণ্ড বৃক্ষের ন্যায় শাখাপল্লব বিস্তার করিয়া আছে; ইহার মূলে যে বীজ ছিল, তাহাই সমস্ত বৃক্ষে সঞ্চালিত হইয়া, তমসাবৃত মূল হইতে সুকোমল পুষ্প পর্য্যন্ত সর্ব্বাংশে প্রাণ সঞ্চার করিতেছে। বৃক্ষের ত্বক্‌, পুষ্প, পল্লব, কোষাণু, সমস্ত পরিবর্ত্তিত হইতেছে, মরিয়া যাইতেছে, আবার নূতন হইয়া জন্মিতেছে। যে মূল-শক্তি বৃক্ষকে উৎপাদন করিয়াছিল, যাহা বৃক্ষবিশেষের জন্মমৃত্যুর মধ্যে সর্ব্বদাই বর্ত্তমান, সেই শক্তিই ক্ষণস্থায়ী ভৌতিক উপকরণ-সকলকে বিশেষ বিশেষ আকার ও শৃঙ্খলা প্রদান করিতেছে। জগতের প্রাণ, জীবন্ত ব্রহ্মরূপ যে এই শক্তি, ইহা কোথা হইতে নিঃসৃত হইতেছে?—ভূমি হইতে। ভূমিই আদিম ব্রহ্মের প্রতিরূপ। তাহা হইতে সমস্ত উৎপন্ন হইতেছে, তাহাতেই সমস্ত প্রতিগমন করিতেছে; যুগযুগান্তের পর যখন এই শক্তি—যাহা বৃক্ষকে পোষণ করিতেছিল—ক্ষয় হইবে, তখনই পরিবর্ত্তনের শেষ হইবে, বৃদ্ধির অবসান হইবে, বৃক্ষ পৃথিবীতে প্রতিগমন করিবে এবং সমস্তই নিশ্চেষ্টতার মধ্যে মগ্ন হইবে। ‘আপাততঃ, তুমি স্ত্রী, তুমি পুরুষ, তুমি শিশু, তুমি যুবতী, তুমি যষ্টি ধারী বৃদ্ধ, তুমি নীল ভ্রমর, তুমি হরিৎপক্ষ ও লোহিতনেত্র শুকপক্ষী, তুমি বজ্র, তুমি ষড়ঋতু, তুমি সমুদ্র। তুমি অনাদি, কেন না, তুমি অনন্ত, তোমা হইত বিশ্বব্রহ্মাণ্ড