পাতা:ভারতবর্ষে.djvu/৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতবর্ষে—জয়পুর।
৪৫

লোকেরা ঘুড়ি উড়াইতেছে ও স্কুলের ছাত্রদিগের ন্যায় ছুটাছুটি করিতেছে। এই সমস্ত শিশুপ্রকৃতি লোকেরা হাসিতেছে খেলিতেছে— ইহাদিগকে দেখিয়া মনে হয় কোন কবি অদ্ভূত-রসপূর্ণ কল্পনার খেয়ালে এমন একটি স্বপ্নজগৎ সৃষ্টি করিয়াছেন যেখানে সকলই লঘুপ্রকৃতি, অদ্ভুত, সুখী, হাওয়ার-ন্যায়-ফুর্‌ফুরে—যেখানে কোন দুঃখ নাই, কোন কুৎসিত বস্তু নাই। এই জগতের লোকেরা জন্তুদিগের সহিত ভ্রাতৃভাবে একত্র বাস করিতেছে, ইহারা আমাদিগের অপেক্ষা ঢের সরল ও খোলা-প্রাণ। এই দেখ ছোট ছোট গাধা ও উটের সারি; উটেরা হেলিয়া-দুলিয়া ধীরগতিতে চলিয়াছে এবং রাস্তার ভীড় ছাড়াইয়া আপনাদিগের উন্নত কণ্ঠ উৰ্দ্ধে উত্তোলন করিয়াছে; গৃহের ছাদে কটা-কটা বানরেরা বসিয়া আছে; ঐ দেখ কতকগুলি গরু, উহাদের বড় বড় হরিদ্বর্ণ সিং; উহাদের দেহ সমস্ত সাদা—মনে হয় যেন মার্ব্বল পাথরে খুদিয়া-বাহির-করা।

 কতকগুলি কুকুর দেখিলাম, তাহদের গা হল্‌দিয়া, নীল ও লাল রঙে রঞ্জিত। আর একটু দূরে একটা চকের মধ্যে পায়রার ঝাঁক দেখিতে পাইলাম, বৃহৎকায় হস্তীরা যাইবামাত্র তাহারা উড়িয়া অন্যত্র বসিতেছে। এই সকল জীবন্ত পশুপক্ষীর মধ্যে, দেবত্বপ্রাপ্ত বৃক্ষ, হস্তী, বানর প্রভৃতির ক্ষুদ্র মূর্ত্তিসকলও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত। একটা বৃহৎ চৌমাথা রাস্তা—এই চৌমাথা দিয়া আর একটা রাস্তা ধরা গেল। এ রাস্তাটাও পূর্ব্বের ন্যায় বৃহৎ, সিধা ও গোলাপী রঙে রঞ্জিত। এখানেও কতকগুলি মন্দির দেখিলাম, হস্তীর প্রস্তরমূর্ত্তিসকল মন্দিরের পাদদেশে প্রতিষ্ঠিত। এই গোলমালের সীমা নাই—পথিকের দল, ফুলের রাশি, গর্দভ, উষ্ট্র, ঘোড়সওয়ার, দোকানদার প্রভৃতিতে পরিপূর্ণ। পায়রার