পাতা:ভারতবর্ষে.djvu/৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫২
ভারতবর্ষে।

বের্‌গেইন্‌ এবং ফরাসী দেশীয় সংস্কৃতপণ্ডিতদিগের উল্লেখ করিয়া প্রভূত প্রশংসা করিলেন। অবশেষে বলিলেন—“মোদ্দা কথা, যুরোপের বিষয় আমরা যাহা কিছু দেখিতে পাই, তাহা ইংলণ্ডের ভিতর দিয়া। ছাত্র যুবকেরা উচ্চশিক্ষার শ্রেণীতে প্রবেশ করিয়া ইংরাজি প্রাচীন সাহিত্য পাঠ করিতে আরম্ভ করে। সেক্সপিয়ার, মিল্টন, (হিন্দু মস্তিষ্কের পক্ষে সুন্দর আরম্ভ) তৎপরে অ্যাডিসন, পোপ্‌—তাহার পর দর্শন ও বার্ত্তা-শাস্ত্রের গ্রন্থকার লক্‌, হিউম, অ্যাডাম স্মিথ্‌, বৰ্ক, অষ্টাদশ ও উনবিংশতি শতাব্দীর লেখকগণ, স্পেন্সর পর্য্যন্ত সমস্তই পঠিত হয়। ইহার মধ্যে স্পেন্সরের প্রভাব সর্ব্বাপেক্ষা অধিক। তবে, ফরাসী ও জর্ম্মান লেখকদের রচনাসকল যাহা কিছু আমরা জানিতে পাই, তাহা মূল হইতে না—ইংরাজি অনুবাদ হইতে। সাধারণতঃ ফরাসী ও জর্ম্মান ভাষা আমরা প্রায় কেহই জানি না। কিন্তু আজকাল ইংলণ্ড ছাড়া অন্য দেশের প্রতিও আমাদের শ্রদ্ধা আকৃষ্ট হইতে আরম্ভ হইয়াছে। হেগেল, ফিখ্‌টের সহিত আমরা ঘনিষ্ঠরূপে পরিচিত নহি বটে, কিন্তু আমরা প্রাচ্য দর্শন-শাস্ত্র পাঠ করিয়া থাকি; বিশেষতঃ উপনিষদ্‌ ও প্রাচীন বেদান্ত-শাস্ত্র—উহার মধ্যেই স্পিনোজা, কাণ্ট্‌, হেগেল, সপেন্‌হয়ার সমস্তই একাধারে পাওয়া যায়।” ... ...

 একটু একটু করিয়া তিনি ক্রমশঃ মাতিয়া উঠিলেন—ক্রমে দেখিলাম তাঁহার স্বদেশীয় প্রাচীনশাস্ত্রের প্রতি প্রগাঢ় ভক্তি। তিনি বলিলেন, “পাঁচ ছয় বৎসর হইতে, আমাদের স্বদেশীয় শাস্ত্রের অনুকূলে স্রোত ফিরিয়াছে। ইতিপূর্ব্বে, ইংরাজি শিক্ষার প্রভাবে, কলিকাতার লেখকেরা হিন্দুধর্ম্মের অন্তর্নিহিত দুর্নীতি ও অযৌক্তিকতার উল্লেখ করিয়া বিস্তর নিন্দা করিত। এখন আমরা বুঝিতে আরম্ভ করিয়াছি, হিন্দুধর্ম্মের অতিরঞ্জিত উক্তিসকলের মধ্যেও