একটা গভীর তত্ত্ব প্রচ্ছন্ন আছে। এখন আমাদের চিন্তাশীল লেখকেরা হিন্দুধর্ম্ম সমর্থন করিয়া থাকেন। আমাদের এখন এই উচ্চ আকাঙ্ক্ষাটি বলবতী হইয়াছে যে, আমরা আপনাতে আপনি ফিরিয়া আসি—আমাদের নিজত্ব ফিরিয়া পাই। দেখুন, মহারাজা এই ইংরাজী ব্যাপার-সকল এখানে তো প্রবর্ত্তিত করিয়াছেন, কালেজ, মিউজিয়ম্, শ্রমশিল্প-বিদ্যালয় স্থাপন করিয়াছেন, কিন্তু তিনি হিন্দুধর্ম্মের বিরুদ্ধে কিছুই করেন না। তাঁহার “অম্বর” প্রাসাদে কালীদেবীর সম্মুখে ছাগ বলি হয়। আমরা সাঙ্কেতিক চিহ্নের মধ্যে উদ্দেশ্য দেখিতে পাই, অক্ষরের মধ্যে অর্থ দেখিতে পাই—যে সকল বাহ্য অনুষ্ঠান অজ্ঞ সাধারণের জন্য কল্পিত হইয়াছে, তাহার মধ্যে গূঢ় অভিপ্রায় আছে। ভারতবর্ষের মধ্যে সেরা বুদ্ধিমান বাঙ্গালার নব্য সম্প্রদায় যে ইংরাজী একেশ্বরবাদ এত আগ্রহ ও উৎসাহের সহিত গ্রহণ করিয়াছিলেন, সেই একেশ্বরবাদের প্রতিকূলে আজকাল উল্টা স্রোত বহিতে আরম্ভ হইয়াছে। আমরা এখন বুঝিতেছি, উহা অপেক্ষা একটা গভীরতর তত্ত্বের আমরা অধিকারী এবং সেই তত্ত্বটি আমাদের দেশের নিজস্ব ধন। স্পেন্সরের লেখা আমরা পড়িতে ভালবাসি, তাহার কারণ স্পেন্সরও ঈশ্বরের ব্যক্তিগত অস্তিত্বের বিরোধী। তাঁহার মতে ঈশ্বরের সগুণ কল্পনা মানবীকরণের প্রকারান্তর মাত্র। তাঁহার মতে ঈশ্বরের স্বরূপ অজ্ঞেয়, অনির্ব্বচনীয়, এক, কিন্তু সেই এক হইতেই কল্পেকল্পে বিবিধ জীব ও সর্ব্বপ্রকার আকার ক্রমশঃ অভিব্যক্ত হইতেছে, তাই তাঁহার লেখা আমাদের বেদান্তের ব্রহ্মকে অনেকটা স্মরণ করাইয়া দেয়।”
এই হিন্দু যাহা বলিলেন তাহা কি সত্য? ভারতবর্ষ আত্মচেতনা লাভ করিয়া সত্যই কি ইংলণ্ডীয় জ্ঞান বুদ্ধির অধীনতার