দেবমূর্ত্তি পশুমূর্ত্তি গড়িতেছে, জরির জুতা তৈয়ারি করিতেছে, গৃহ-প্রাচীর নীল রঙের ছবির দ্বারা চিত্রিত করিতেছে, সুন্দর আরব ঘোড়ায় সওয়ার হইতেছে, আকাশের পক্ষীদিগকে পোষণ করিতেছে, ঘুড়ি উড়াইতেছে এবং বিশ্বস্তচিত্তে মুক্ত আলোকে সুখ-স্বচ্ছন্দে জীবনযাত্রা নির্ব্বাহ করিতেছে। হাঁ! ইহাদের জীবন সাদাসিধা, সুখী, শিশু-প্রায়—ইহাদের মধ্যে সঙ্গীতের বিরাম নাই—আনন্দের অবসান নাই। আমাদের দুঃখময় তমোময় যুরোপে ফিরিয়া যাইবার সময় আমি এই সমুজ্জ্বল কবিতাময় স্বপ্নটিকে সঙ্গে লইয়া যাইতেছি।
ভারতবর্ষে বারাণসী।
নাট্য দৃশ্যের হঠাৎ পরিবর্ত্তন হইল। ২৪ ঘণ্টা উত্তর বাঙ্গলার রেলপথে ও ২১ ঘণ্টা গ্রেট পেনিন্সুলার রেলপথে ভ্রমণ করিয়া কাল সন্ধ্যার সময় এখানে পৌঁছিলাম। পথে কিছুই বিশেষ দেখিবার নাই। মোঙ্গলীয় শীতল (দার্জিলিং) প্রদেশ হইতে নামিয়া একেবারে ভারতের পুণ্যভূমিতে—সনাতনী গঙ্গাদেবীর পুণ্য তটে আসিয়া উপস্থিত।
এইখানেই সেই প্রাচীন ভারতবর্ষ—হিন্দুর ভারতবর্ষ। এখানে যুরোপীয়েরা বাস করে না, এখান দিয়া কেবল যাতায়াত করে মাত্র। ইংরাজ ইহার কিছুই পরিবর্ত্তন করিতে পারে নাই; বণিক কিম্বা কারখানাওয়ালা হইয়া ইংরাজেরা এখানে রীতিমত আড্ডা গাড়ে নাই। এই নগরী—এই হিন্দুরা–এই সকল মন্দির দশ