পাতা:ভারতবর্ষে.djvu/৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতবর্ষে—বারাণসী।
৫৯

নিজ মত প্রচার করিতে আসিয়াছিলেন। আজি আমাদের পুরাকালীন পাশ্চাত্যের কিছুমাত্র অবশিষ্ট নাই। সে জগৎ একেবারেই মৃত—তাহার শেষ হইয়া গিয়াছে—কালের অন্ধকারে তাহাকে একেবারেই গ্রাস করিয়া ফেলিয়াছে। কিন্তু এই কাশী নগর চিরকালই ভারতের সেই মহিমান্বিত কাশীধাম।

 প্রভাতে, যখন সূর্য্যমণ্ডল স্পন্দিত-হৃদয়ে গঙ্গার পশ্চাতে উদিত হয় তখন পঁচিশ হাজার ব্রাহ্মণ, হিন্দু-জনতার সম্মুখে, নদীর তটদেশে উপবিষ্ট হইয়া এখনও তারকার উদেশে, পুণ্য নদীর উদ্দেশে, আদিম শক্তিসমূহের উদেশে, প্রাণের দৃশ্যমান উৎপত্তি স্থানসমূহের উদ্দেশে, সেই প্রাচীন বৈদিক স্তুতিগান সকল পাঠ করিয়া থাকে। রোম নগর ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের নিকট যত না পবিত্র, কাশী হিন্দুর নিকট তদপেক্ষা অধিক পবিত্র। উহার প্রত্যেক প্রস্তরখণ্ড পবিত্র। কাশীতে যাহার মৃত্যু হয়, কোনও মলিনতা কোনও পাপই তাহাকে স্পর্শ করিতে পারে না। খৃষ্টিয়ান হউক, মুসলমান হউক, গোহত্যাই করুক বা গোমাংসই আহার করুক, সে নিশ্চয়ই কৈলাসধামে—শিবলোকে গমন করে। অতএব সেই ব্যক্তি ভাগ্যবান, জীবনের শেষভাগ যে কাশীতে কাটাইতে পারে। দুই লক্ষেরও অধিক যাত্রী ভারতের সকল দিক্ হইতে এইখানে আসিয়া উপস্থিত হয়। তাহাদের মধ্যে অনেকে বৃদ্ধ ও মৃতকল্প। দুর্ভাগ্যবশতঃ যদি কাহারও কাশীপ্রাপ্তি না হয়, অন্ততঃ তাহার অন্তিম ভস্মরাশি কাশীধামে পরে পাঠান হয়। এই উদ্দেশে পাঠান হয় যে, গঙ্গাপুত্রেরা অন্ত্যেষ্টি-মন্ত্র পাঠ করিয়া তাহার অন্তিম-ভস্ম গঙ্গাদেবীকে সমর্পণ করিবে। হিন্দুরা বলে, ‘কাশী—পুণ্যধাম কাশী—কাশীকে ধ্যান করিলেই শান্তিতে মৃত্যু হয়।’

 বাস্তবিকই এই নগরটি অসাধারণ। অন্যত্র, ধর্ম্মাচরণ, প্রকাশ্য