পাতা:ভারতবর্ষে.djvu/৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬০
ভারতবর্ষে।

জীবনের এক অংশমাত্র, কিন্তু কাশীতে ধর্ম্ম ছাড়া আর কিছুই দেখা যায় না। ধর্ম্ম এখানে সমস্ত গ্রাস করিয়া আছে—মানবজীবনের প্রত্যেক মুহূর্ত্ত পুর্ণ করিয়া আছে—নগরকে মন্দিরে মন্দিরে ছাইয়া ফেলিয়াছে। উনবিংশতি সহস্রেরও অধিক মন্দির, এতদ্ব্যতীত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দেবালয় অসংখ্য। মুর্ত্তির সংখ্যা যদি ধর তো সে কাশীর জনসংখ্যার দ্বিগুণ। প্রায় পাঁচ লক্ষ হইবে। কাল সন্ধ্যায় যখন পৌঁছিলাম, দিনের আলো তখনও ছিল, তাই বেড়াইতে বেড়াইতে নদীর ধার পর্য্যন্ত গেলাম। নগরের আঁকা-বাকা গলিসকল অৰ্দ্ধনগ্ন মানবকুলের গতিবিধিতে পরিপূর্ণ। দেবালয়ের দ্বারের সম্মুখে লোকের বেশি ভীড়। গৌরবর্ণ ব্রাহ্মণেরা ঠেলাঠেলি করিয়া চলিয়াছে; সন্ন্যাসীরা আসন করিয়া উপবিষ্ট—ভষ্মমাখা নগ্নদেহ—স্থির দৃষ্টি—চারিদিকের চঞ্চল গতিবিধির মধ্যে প্রস্তরবৎ অচল।

 হল্‌দে ফুলের হার, মালা, প্রস্তরের শিবলিঙ্গ প্রভৃতি নানাবিধ ধর্ম্মোপকরণে এখানকার দোকান সকল পরিপূর্ণ। ঘরের দেয়ালে, দ্বারের উপরিভাগে, কুলঙ্গির উপর, নানাপ্রকার কদাকার দেবমূর্ত্তি—কাহারও বা গজমুণ্ড—কাহারও বা গায়ে সাপ জড়ানো। স্থানে স্থানে কূপ—তাহা হইতে পচা ফুলের দুর্গন্ধ বাহির হইতেছে। সেই সকল কূপে দেবতার বাস—তাহার চারিদিকে লোকের অত্যন্ত ভীড়। প্রাচীরের গায়ে নীলরঙে চিত্রিত হিন্দু দেবদেবীর পৌরাণিক কাহিনী। দেবদেবীর অশ্লীল মূর্ত্তিসকল মালার আকারে মন্দিরের চারিদিকে বেষ্টিত। এত দেবদেবীর মূর্ত্তি যে, বড় বড় মন্দিরেও যেন আর ধরে না—রাস্তার মধ্যে ছোট ছোট দেবালয়েও দেবতাদিগকে আশ্রয় লইতে হইয়াছে—তাহাতে লম্বোদর গণেশ অথবা ভীষণ-মূর্ত্তি কালীদেবী অধিষ্ঠিত। মন্দির বেদীর উপর যে জুঁই ফুল