শিরোদেশ পর্যন্ত নিজের দক্ষিণে হেলিয়া দণ্ডায়মান বা উপবিষ্ট থাকে। এই ত্রিভঙ্গ ঠামে রচিত দেবীমূর্তিগুলির মস্তক মূর্তির দক্ষিণে (শিল্পীর বামে) ও দেবমূর্তিগুলির মস্তক নিজের বামে (শিল্পীর দক্ষিণে) হেলিয়া থাকে, অর্থাৎ দেবতা দেবীর দিকে, দেবী দেবতার দিকে ঝুঁকিয়া রহেন। অতএব ত্রিভঙ্গ ঠামে পুরুষমূর্তিকে নিজের বামে (শিল্পীর দক্ষিণে) ও স্ত্রীমূর্তিকে নিজের দক্ষিণে (শিল্পীর বামে) হেলাইয়। গঠন করা বিধেয়, যাহাতে স্ত্রী ও পুরুষ দুইটি ত্রিভঙ্গ মূর্তি পাশাপাশি রাখিলে বোধ হইবে যেন মৃণালদণ্ডের উপরে প্রফুল্ল পদ্মের মতো উভয়ের মুখ উভয়ের দিকে ঝুঁকিয়া পড়িতেছে। ইহাই হইল যুগলমূর্তির বা দেবদম্পতির গঠনরীতি। মূর্তিতে অভিমান খেদ ইত্যাদি ভাব দেখাইতে হইলে পুরুষে নারী-ত্রিভঙ্গ এবং নারীতে পুরুষ-ত্রিভঙ্গ রচনা প্রয়োগ করিতে হইবে, অর্থাৎ উভয়ে উভয়ের বিপরীত মুখে হেলিয়া রহিবে। বিষ্ণু, সূর্য প্রভৃতি যে সকল মূর্তি দুই পার্শ্ব-দেবতা বা শক্তির সহিত গঠন করা হয়, তাহাতে সমভঙ্গ ও ত্রিভঙ্গ দুই প্রকারের ভঙ্গ ব্যবহৃত হইতে দেখা যায়, অর্থাৎ মধ্যস্থলে প্রধান দেবতা সমভঙ্গ ঠামে কোনো এক পার্শ্ব-দেবতার দিকে কিঞ্চিৎ-মাত্র না হেলিয়া একেবারে সোজাভাবে দণ্ডায়মান বা উপবিষ্ট রহেন, আর তাঁহার দুই পার্শ্বে যে দুই দেবতা বা শক্তি— যিনি দক্ষিণে আছেন তিনি, যিনি বামে আছেন তিনিও— ত্রিভঙ্গ ঠামে উভয়েই প্রধান দেবতারদিকে নিজের নিজের মাথা হেলাইয়া দণ্ডায়মান বা উপবিষ্ট থাকেন। ইহাতে দুই পার্শ্বমূর্তি দুই সম্পূর্ণ বিপরীত ত্রিভঙ্গঠামে রচনা করিতে হয়, যথা— শিল্পীর বামে ও প্রধান মূর্তির দক্ষিণ পার্শ্বে যিনি তাঁহার মস্তক শিল্পীর দক্ষিণ দিকে ও নিজের বাম দিকে, এবং শিল্পীর দক্ষিণে ও প্রধান মূর্তির বামে যিনি তাঁহার মস্তক শিল্পীর বাম দিকে ও নিজের দক্ষিণ দিকে হেলিয়া রহে। দুই
২৮