পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/১০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা
৯১

যেখানে আলো সেইখানেই ছায়া-যেখানে দক্ষিণাবর্ত সেইখানেই যে বামাবর্ত, এমনি করিয়া যে একটা দোলার মধ্য দিয়া মৃত্যুও অমৃত্যুর ভয় ও আশার, বিভীষিকা ও উৎসাহের নিরন্তর খেলা চলিয়াছে এই গভীর তত্ত্বটিকে নটরাজের মূর্ত্তির মধ্যে শিল্পী ফুটাইয়া তুলিয়াছেন। মনে হয় না পৃথিবীর কোন দেশের কোন শিল্পী ইহলোকের ও পরলোকের এই জাতীয় গৃঢ় রহস্যকে জড়ধাতুর মধ্য দিয়া এমন করিয়া প্রাণ দিতে চেষ্টা করিয়াছেন। জড়ের মধ্যে এমন করিয়া অবিনাশী অমর আত্মার লোকাতীত অনুভবকে জড়ের ভাষায় বিধৃত করিতে চেষ্টা করিয়াছেন। মনের গহন কলরের মধ্যে যে ভাব ধ্যানস্পৃন্দের মধ্যে লোকাতীত অনুভবের স্পর্শে রূপ পরিগ্রহ করে তাহাকে রেখা ও বলতার ভাষায় শিল্পের মধ্য দিয়া প্রত্যক্ষ করিবার এই জাতীয় চেষ্টা ভারতবর্ষ ছাড়া অন্য দেশে সম্ভব নহে। ভারতবর্ষীয় বৌদ্ধ ও হিন্দুশিল্প জাভা প্রভৃতি স্থানে প্রবিষ্ট হইয়া তাহার কি অপরূপ নিদর্শন রাখিয়া গিয়াছে তাহা সুধী সমাজে সুপরিচিত। শুধু তাহাই নহে; তিব্বত তুর্কীস্থান তুফান এমন কি চীন ও জাপান ও সিংহল প্রভৃতি স্থানের শিল্প ভারতবর্ষীয় শিল্পের দ্বারা প্রভাবান্বিত হইয়াছে।

 ভারতীয় শিল্পপদ্ধতির সম্বন্ধে বহুকথা বলিবার ছিল। কিন্তু বর্তমান স্বল্পপরিসর গ্রন্থে তাহা বলা সম্ভব নহে। তথাপি ভারতীয় চিত্রকলার পদ্ধতির সম্বন্ধে ভারতীয়েরা কিরূপ চিন্তা করিতেন সে সম্বন্ধে দুই একটা কথা না বলিয়া এই গ্রন্থ