পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/১১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা
৯৭

মতের সহিত এই মতের অত্যন্ত সাদৃশ্য বা ঐক্য বুঝাইবার জন্য গ্রন্থবাহুল্যের প্রয়োজন হইবে না।

 বুদ্ধঘোষ যাহা বলিয়াছেন তাহা হইতে কয়েকটি কথা তাঁহার দ্বারা মুখ্যতঃ অনুক্ত হইলেও ভাবতঃ উক্ত বলিয়া গ্রহণ করা যায়। সেইগুলিকে পরপর নির্দেশ করিতে চেষ্টা করিব। প্রথমতঃ শিল্পবোধ বা শিল্পসৃষ্টি, চিত্তেরই একটি অবস্থা—an aesthetic state of the mind কাজেই সৌন্দর্য্যবোধ বলিতে যে স্বভাবটি আমরা বুঝি তাহা একটি বিশিষ্ট মানসিক বৃত্তি সম্বন্ধেই প্রযোজ্য। বহির্বস্তু সম্বন্ধে তাহার প্রয়োগ ভক্ত বা গৌণ। দ্বিতীয়তঃ শিল্পানুগত চিত্তবৃত্তির সহিত সুখবোধের কোনও ব্যভিচারী সম্বন্ধ নাই। তৃতীয়তঃ রূপবোধ অর্থ ই রূপসৃষ্টি, শিল্পবোধ অর্থ ই শিল্পসৃষ্টি এবং প্রকাশ ও বোধ অভিন্ন। যেহেতু অন্তরের সৃষ্টি, প্রকাশ বা বোধকেই শিল্প বলা যায় সেইজন্য বহিঃশিল্পকে তাদৃশ চিত্তের অনুকৃতি মাত্র বলা যায়। তাহা না ঘটিলেও শিল্পের অন্তঃপ্রকাশের দ্বারাই তাহার প্রকাশ সুসম্পন্ন হইয়াছে। চতুর্থতঃ শিল্পসৃষ্টির মধ্যে যেহেতু চিত্তের ক্রমবাহী গতির পরিচয় পাই সেইজন্য যদিও শিল্পসৃষ্টির সময়ে সেই শিল্পের কোন একটা অংশ কোন একটি গতিক্ষণের ব্যাপারে নিষ্পন্ন হইয়া থাকে তথাপি তৎক্ষণোৎপন্ন সেই শিল্পচিত্তের প্রভাবে তৎপরবর্তী চিত্তক্ষণপরম্পরা নানাবিধ সম্বন্ধজালে অনুরঞ্জিত হইয়া পূর্ব্বানুরূপ বা পূর্ব্বসঙ্গত অন্য অন্য শিল্পচিত্ত উৎপন্ন করিয়া সমগ্রের সহিত সামঞ্জস্যে একটি সমগ্র শিল্পচিত্তকে উৎপন্ন করে।