পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/১৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা
১২৩

করিয়া পুনরায় নগরে ফিরিয়া আসিয়া যখন গোতে অরণ্যদৃষ্ট সেই গবয়ের সাদৃশ্যের প্রতীতি হয় সেই অনিন্দ্রিয়জ সাদৃশ্য প্রতীতির নাম উপমিতি। বেদান্ত পরিভাষার শিখামণি টীকাকার বলিয়াছেন যে উপমিতির মধ্যে কোন ব্যাপার নাই। দৃষ্ট সাদৃশ্য হইতে অদৃষ্ট সাদৃশ্যের যে প্রতীতি তাহাকেই উপমিতি কহে। উভয় মত একত্র করিলে ফলে তাৎপর্য হইল এই যে একটা সাদৃশ্য জ্ঞানের দ্বারা আমরা আমাদের জ্ঞানবৃদ্ধি করিতে পারি কিংবা যখন আমরা একটা সাদৃশ্যের দ্বারা অপর একটা সাদৃশ্য উপলব্ধি করিতে পারি তখনই তাহাকে উপমান প্রমাণের বিষয়ীভূত বলিয়া গ্রহণ করিতে হইবে।

 এখন প্রশ্ন হইতেছে যে এই উপমান প্রমাণের সহিত চিত্র প্রস্তাবের সম্বন্ধ কি? চিত্রে কয়েকটী রেখা বা বর্ণ সন্নিবেশের দ্বারা আমরা যখন কোনও প্রাণী বা বৃক্ষলতাদির রূপ আঁকি, তখন একদিকে চলে মনোব্যাপার যাহাদ্বারা আমরা অন্তরের মধ্যেই চিত্রেয় বস্তুর সাদৃশ্য ধ্যানযোগে গ্রহণ করিয়া থাকি এবং বাহিরে রেখাদি দ্বারা তাহাকে ফুটাইয়া তুলিয়া সেই রেখাঙ্কিত চিত্র বস্তুর সহিত অন্তগৃহীত সাদৃশ্যের অনুরূপতা অনুভব করি। অপর দিকে দর্শকেরা চিত্রিত বস্তুতে তাহাদের পূর্ব্বদৃষ্ট তৎসজাতীয় বস্তুর সাদৃশ্য গ্রহণবলে চিত্রিত বস্তুকে তত্তদ্বস্তু বলিয়া বুঝিতে পারি। শ্রীশঙ্কুক বলিয়াছেন যে, চিত্রিত বস্তুর জ্ঞান সমাকও নহে, মিথ্যাও নহে, সংশয়ও নহে, কিন্তু এতাদৃশ প্রতীতি উৎপন্ন হয় ইহা অবিসংবাদি সত্য বলি। কোনও যুক্তিবলে ইহার বিরুদ্ধে