গরুর চিত্র আঁকা সম্ভবপর হয় না। ঘোড়া আঁকিবার সময়ও যে ঘোড়ার সমগ্র অবয়ব অন্তরের ধ্যানের দ্বারা ধারণ না করিয়া তাহা আঁকা সম্ভব নয় সে সম্বন্ধে শুক্রনীতিসারে লিখিত আছে— “শিল্পগ্রে বাজিনং ধ্যাত্বা কুর্যাদয়বানতঃ।” (শুক্রনীতিসার ৫২৪ পৃঃ }। কোনও দর্শক যখন সেই চিত্র দেখেন তখন অস্ফুট ভাবে তার চিত্তে গোপিণ্ডের যে সাদৃশ্য অঙ্কিত হইয়াছিল চিত্রীর চিত্তে তদনুরূপ রেখাসম্পাত দেখিয়া সেই চিত্রকে গরুর চিত্র বলিয়া চিনিতে পারেন। গরু দেখিবার সময় যেমন কোন বিশিষ্ট গরুর বিশিষ্ট ধর্ম্মগুলি আমাদের সংস্কার ভূমিতে আরূঢ় হয় তেমনি সমস্ত বিশেষ ধর্ম্মনিরপেক্ষ কেবল গো-ব্যক্তির অবয়বের প্রকার ও অবয়বের সহিত অবয়বের সন্নিবেশবিশিষ্টতাও সংস্কারারূঢ় হইয়া থাকে। ইহা গোবিশেষের সংস্কার নহে ইহা গো-সামান্যের সংস্কার। অথচ এই সংস্কার উৎপন্ন হইবার সময় কোন জ্ঞানপূর্ব্বক সামান্যবোধ থাকে না। আমাদের চিত্তেরই এমন একটা বিশেষ ধর্ম্ম আছে যাহা দ্বারা বিশেষকে বর্জন করিয়া যে সামান্য রূপের মধ্যে সেই বিশেষ ফুটিয়া উঠিয়াছে তাহাকে গ্রহণ করিতে পারে। চিত্রীর চিত্তে কেবলমাত্র যে অবয়বের সন্নিবেশ-বৈচিত্র্যই অঙ্কিত হয় তাহা নহে। সেই অবয়ব সন্নিবেশের দ্বারা সেই অবয়বটীর বিভিন্ন অবয়বে যে বিশেষ ভঙ্গীগুলি ফুটিয়া উঠে, তাহাদের মধ্যে পরস্পরের যে একটী অনুরূপ সম্বন্ধ আছে, তাহাও তাহার মনের মধ্যে অস্ফুটভাবে গ্রথিত হইয়া থাকে। বিভিন্ন অবয়বসন্নিবেশের বিভিন্ন ভঙ্গীগুলির মধ্যে যে একটী বিশেষ জাতীয়
পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/১৪৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩২
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা