পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/১৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা
১৩৭

ভূমিতে চলিতে থাকে। কোনরূপ উদ্বোধক চৈত্তিক বা বাহ্যিক সামগ্রী উপস্থিত হইলে ইহা উদ্বুদ্ধ হয়। এই সামঞ্জস্যের কোন বিশিষ্ট সমগ্র রূপ যখন জ্ঞাতচিত্তের মধ্যে ভাসিয়া উঠিয়া স্থির হইয়া বিস্তৃত হয়, তখনই একটী ধ্যানসৃষ্টি ঘটে। এই ধ্যানস্থষ্টিকে কোন কোন ইয়োরোপীয়ের intuition) বলিয়াছেন। আমাদের দেশে কেবল দেবদেবীর সৃষ্টির বেলায় নয়, প্রাণী বা মনুষ্যসৃষ্টির বেলায়ও সমাধিসৃষ্টির বা ধ্যানসৃষ্টির কথাও উল্লিখিত আছে। এই ধ্যানভৃষ্টির পর বাহ্যরূপসৃষ্টি। এই প্রক্রিয়া গ্রহণপ্রক্রিয়ার বিপরীত ক্রিয়ামাত্র। যে প্রক্রিয়ার বাহিরের সামঞ্জস্য অন্তরের মধ্যে জ্ঞাত বা অজ্ঞাতরূপে অঙ্কিত হইয়াছে, ধ্যানপ্রক্রিয়ার মধ্য দিয়া তাহাই কিঞ্চিৎ ফুট হইয়া আবার তাদৃশ বাহরূপের মধ্য দিয়া আপনাকে প্রকাশ করে। ধ্যানের মধ্যে সংস্কার হইতে সামগ্রী আহৃত হইয়া একটা রূপ ফুটিয়া উঠিলেও, সংস্কারের সমস্ত অনুরূপ সামগ্রী তাহার মধ্যে নিঃশেষে ফুট হয় না। ধ্যানধৃত রূপ যেমন বাহিরের রেখায় রেখায় ফুটিতে থাকে তেমনি সে রেখার উদ্বোধকতায় সংস্কারচিত্ত অনেক সময় ধ্যানাবস্থাকে অতিক্রম করিয়া চিত্রকরের নিকট নব নব ব্যঞ্জনা উপস্থাপিত করে। অনেক সময়ে এই নব ব্যঞ্জনা ধ্যানধৃতের অনুরূপ হইলেও অতিরিক্ত। এইটুকুকে বিশেষভাবে শিল্পীর intuition বা চৈত্রিক প্রজ্ঞা বলা যাইতে পারে। ইহা যে কেমন করিয়া উদিত হইল তাহাও ব্যাখ্যা করা সহজ নহে, কারণ সংস্কারাবস্থার সাক্ষাৎ উদ্বোধকতায় ইহার উৎপত্তি।