পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/১৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬০
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা

এই জগৎ শব্দেরই বিকারস্বরূপ। শব্দই জ্ঞানাকারে পরিণত হইয়াছে। এই কথাটীকে আমরা সত্য বলিয়াও বলিতে পারি মিথ্যা বলিয়াও বলিতে পারি। জগতের একটী শব্দরূপ, আছে ইহা অস্বীকার করা যায় না। সকল জড়বস্তুরই একটী ধ্বনিরূপ আছে। ধ্বনিরূপ ছাড়া তার আরও অন্যরূপ থাকিতে পারে কিন্তু তাহা দ্বারা তাহার ধ্বনিরূপ ব্যাহত হয় না। তেমনি জগতের আরও সহস্রবিধরূপ দেখিলেও প্রতিভেন্দ্রিয় দ্বারা গৃহীত জগতের সৌন্দর্য্যরূপতাকে আমরা অস্বীকার করিতে পারি না। পরন্তু অর্থনির্ভাসলক্ষণ সম্বন্ধের দিক্‌ দিয়া বিচার করিলে আমাদের সৌন্দর্য্য-কামনার মধ্য দিয়া আমাদের জীবনের একটী রহস্যময় বিরাট্‌ আকাঙ্ক্ষা স্ফূর্ত্ত ও তৃপ্ত হয়। আমাদের অন্তরের আকাঙ্ক্ষার দিক্ বর্জ্জন করিয়া বাহ্যবস্তুর স্বরূপ নির্ণয় করা সুকঠিন। এমন কি একান্ত নিরয়ব কালগ্রহণ কালে ও তাহার পরিমাণাদি ধর্ম্ম আমাদের অন্তরের আকাক্ষাদ্বারাই গৃহীত হয়। রেল্‌ওয়ে ষ্টেশনে বসিয়া নিরন্তর গাড়ী ছাড়ার কামনা চিত্তে উপস্থিত হইলে অতি স্বল্পকালকে অতি দীর্ঘ বলিয়া মনে হয়। আবার প্রিয়প্রিয়ার সংযোগে দীর্ঘ যামিনী মুহূর্ত্তবৎ মনে হয়। যতক্ষণ কামনা থাকে ততক্ষণ কাম্যবস্তুর উপভোগে আভিমানিক আনন্দ উৎপন্ন হয়। আবার সেই কামনা না থাকিলে উপভোগের ব্যাপার মাত্রকে একান্ত অর্থহীন বলিয়া মনে হয়। এই জন্যই অর্থার্থিভাবলক্ষণ-সম্বন্ধের দ্বারাও শিল্প বস্তুর সত্তা ও সত্যত্ব প্রমাণিত হয়।