পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা

ঘটনা ঘটিল সময়ের এই পারম্পর্য্য তাহারা চিত্রে অনেকসময়ই ফোটানো আবশ্যক মনে করিতেন না। একবিন্দু শিশিরের মধ্যে যেমন সমস্ত বিশ্ব প্রতিবিম্বিত হইতে পারে তেমনি চিত্রীর ধ্যানলোকের মধ্যে বর্ণনীয় জীবনটি একমুহূর্ত্তে আবিষ্কৃত হইত। সেই আবিষ্কারটিকে তিনি দর্শকের নিকট উপস্থাপিত করিতে চেষ্টা করিতেন। এই চিত্রীদের চক্ষুতে বস্তুর আকারও তেমনি নিয়ত ও অবিচ্ছিন্ন নহে। যৌগিক বিভূতির বর্ণনায় আমরা দেখিতে পাই যে যোগী অণুর ন্যায় হ্রস্ব হইতে পারিতেন এবং অতি দীর্ঘকায় হইতে পারিতেন। কি কাব্যে কি চিত্রে কোন জীবের আকার পরিবর্ত্তনে কোন অসামঞ্জস্য লক্ষিত হয় নাই। হনুমানের বর্ণনায় আমরা অনেক সময় দেখিতে পাই যে হয়ত তিনি মক্ষিকাকারে কোথাও প্রবেশ করিলেন, কোথাও বা ক্ষুদ্র বানরের আকারে দেখা দিলেন, কোথাও বা বিশাল গন্ধমাদনকে স্কন্ধে লইয়া লম্ফ দিয়া সাগর উত্তীর্ণ হইলেন। এই কল্পনার নিয়ন্ত্রণহীনতায় যেমন ভারতীয় কবিরা ভীত হইতেন না, ভারতীয় চিত্রীও তেম্‌নি এই জাতীয় অঙ্কনে শঙ্কিত হইতেন না। চিরস্থায়ী যে আত্মা সমস্ত জগতের প্রাণপতি হইয়া রহিয়াছেন, অব্যক্ত প্রকৃতি তাঁহারি লীলাশক্তি। অব্যক্ত অবস্থায় তাহা প্রত্যক্ষ করা যায় না, বিকৃত অবস্থায় কিন্তু তাহাই ইন্দ্রিয়গোচর হয়। কাজেই কোন অলৌকিক বিষয় বর্ণনা করার সময় বস্তুর স্বাভাবিক আয়তন, আকৃতি বা প্রকৃতির পরিবর্ত্তন করিতে তাঁহারা দ্বিধাবোধ করিতেন না। বুদ্ধের মাতা