পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা

সাঁচীস্তূপের দ্বারচিত্রের মধ্যে প্রকৃতির অতি সুন্দর অনুকৃতি দেখা যায়। ইহাতে ক্ষোদিত হরিণ হাতী প্রভৃতির মধ্যে প্রাকৃতিক অনুকৃতি সফল হইয়াছে। বোধ হয় এইগুলির মধ্যে অতি প্রাচীনযুগের ভারতীয় চিত্রকলার অবশেষ দেখা যায়।’ এই সাঁচীচিত্রের মধ্যেই বৃক্ষসংলগ্ন একটি যক্ষিণী মূর্তির যৌবনধর্ম্ম যেন বৃক্ষের যৌবনের সহিত তুলিত করিয়া গড়া হইয়াছে, তাহা বিশেষ উল্লেখযোগ্য। এই সমস্ত চিত্রের অনেকগুলিতেই স্বাভাবিক সাদৃশ্য ফুটিয়া উঠিয়াছে। যদিও আমরা পূর্ব্বে বলিয়াছি যে স্বাভাবিক সাদৃশ্য দেখানো হিন্দু শিল্পপদ্ধতির কোথাও উদ্দেশ্য ছিল না। তথাপি সাধারণ মনুষ্য বা ইতর প্রাণীর চিত্র আঁকিতে গেলে সর্বাঙ্গসাদৃশ্য দেখানো যে তাহাদের প্রধান লক্ষ্যস্থল থাকিত তাহা আমরা শিল্পশাস্ত্রের বর্ণনা হইতেও দেখিতে পাই। শিল্পরত্নগ্রন্থে ৪৬ অধ্যায়ে চিত্রলক্ষণ প্রস্তাবে লিখিত আছে—

“জঙ্গমা বা স্থাবরা বা যে সন্তি ভুবনত্রয়ে।
তৎ তৎ স্বভাবতস্তেষাং করণং চিত্রমুচ্যতে।
তচ্চিত্রং তু ত্রিধা জ্ঞেয়ং তস্য ভেদোইধুনোচ্যতে।
সর্ব্বাঙ্গদৃশ্যকরণং চিত্রমিত্যভিধীয়তে।”

 চিত্রের প্রধান উদ্দেশ্যই ছিল চোখে যেমন দেখা যায় সে রকম আঁকিয়া দেখানো। সংস্কৃত দর্শনশাস্ত্রের চক্ষুবিজ্ঞান সম্বন্ধে যে আলোচনা আছে তাহাতেও প্রধানতঃ সকল প্রকার দৃশ্যমান বস্তুরই বহিঃসত্তা অঙ্গীকার করা হইত। বেদান্তমতে রজ্জুতে