পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা
৪৯

এই অঙ্গহার বিষয়ে হস্তপদাদির যে বিশেষ বিশেষ অবস্থান—যাহা না হইলে অঙ্গহার সম্ভব হয় না, তাহাকে করণ বলে। এই দুইটির দ্বারা নৃত্য সম্ভব হয় না বলিয়া এই দুইটিকে নৃত্যমাতৃকা বলে। এক একটি অঙ্গহার নিষ্পন্ন করিতে অনেকগুলি করণের প্রয়োজন হয়। অঙ্গহারগুলির পরস্পর বিন্যাসবৈচিত্র্যের চাঞ্চল্যে নৃত্যের সৃষ্টি হয়। নাট্যশাস্ত্রে ১০৮টি করণেরও ৩২ প্রকার অঙ্গহারের উল্লেখ আছে। ইহা ছাড়া চারি প্রকার রেচকের উল্লেখ আছে,—যথা পাদরেচক, কটিারেচক, কররেচক ও কণ্ঠরেচক। বলয়াদি বিভিন্নপ্রকারে পরিভ্রমণের নাম রেচক। যদিও অনেকস্থলে নৃত্য কেবলমাত্র শোভার জন্য করা হইত তথাপি অনেক প্রকারের নৃত্য মনোভাব প্রকাশের জন্য ব্যবহৃত হইত। অনেক সময় কোন গানের সহিত নৃত্য হইলে সেই গানের অর্থটি নৃত্যের দ্বারা প্রকাশ করা হইত। এই জাতীয় নৃত্যকে নৃত্যকাব্য বলা হইত। ছলিক, ডম্বিক, ভানক প্রভৃতি বিভিন্ন জাতীয় নৃত্যকাব্যের প্রচলন ছিল। মালবিকাগ্নিমিত্রে এই ছলিক নৃত্যের পরিচয় পাওয়া যায়। এইরূপে নানাপ্রকার জীবের বা বৃক্ষলতাদির বা নানা আখ্যান বিনাভাষায় নানাজাতীয় নৃত্যের দ্বারা দেখানো হইত। অনেক সময় নৃত্যের দ্বারা ঋতু বর্ণনাও করা হইত, অনেক সময় সমস্ত রামায়ণটি নৃত্যের দ্বারা দেখান হইত, কোন সময় বা বৃন্দাবনলীলাও দেখানো হইত। এই সমস্ত নৃত্যের প্রধান উদ্দেশ্যই ছিল চলন্ত এবং জীবন্ত মনোভাবকে স্পষ্ট করিয়া দেখানো। চিত্রশাস্ত্রকে নৃত্যশাস্ত্রের