পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা
৬৩

প্রযত্ন চলিত। কোণারকের বিশাল প্রস্তৱমন্দিরটি যাঁহারা দেখিয়াছেন তাহারা নিশ্চয়ই বলিবেন যে সেখানে সূর্য্যাশ্বগুলির এমনই গতিভঙ্গী দেখানো হইয়াছে, সঙ্গে সঙ্গে শত শত হস্তীর এমন শোভাযাত্রা চলিয়াছে, বলাকামিথুনেরা এমনই করিয়া ডানা মেলিয়া উড়িয়া চলিয়াছে, ফুলের মালাগুলি এমনই করিয়া লতাইয়া চলিয়াছে যে কিছুক্ষণ নিস্পন্দ হইয়া তাকাইয়া দেখিলে মনে হয় যেন যথার্থই ব্যোমপথে সূর্য্যাশ্ববাহিত বিরাট রথ উড়িয়া চলিয়াছে। প্রাকৃতিক জগতের বেষ্টনীর মধ্যে মানুষের বাস, সেই জগতের জীবন হইতে মানুষের জীবন, সেই জগতের রূপবোধ হইতে মানুষের রূপবোধ; বহির্জগৎ যে নিয়মে চলিতেছে, যে ক্রমশৃঙ্খলায় সেখানে জীবন প্রবাহ ছুটিয়াছে, মানুষের জীবনও সেই নিয়মে চলিয়াছে ও সেই ক্রমশৃঙ্খলায় গড়িয়া চলিয়াছে। মানুষে যাহা, জগতে তাহা, জগতে যাহা মানুষে তাহা—“লোকসাম্মিতেইয়ং পুরুষঃ, যাবন্তো লোকে, তাবস্তঃ পুরুষে, যাবন্তঃ পুরুষে তাবন্তো লোকে” (চরক)। আমাদের দেবতা নরপতি নহেন, পশুপতি। তাঁঁহাদের বাহন উদ্ভিদ ও প্রাণীজগতে, তাহারা অভয় দেন মানুষকে নয় সর্বসত্ত্বকে। সৰ্বসত্ত্বের দুঃখমোচনের জন্য আমাদের বোধিসত্ত্ব তাঁহার জীবন উৎসর্গ করিয়াছেন। এইজন্য আমাদের চিত্র কেবল মানুষকে লইয়া নয়, আমাদের প্রাকৃতিক দৃশ্য মানুষের ভোগ্যের একটি Landscape painting নয়, মানুষ, প্রাণী ও উদ্ভিদ-জগৎ লইয়া যে বিরাট প্রাণজগৎ তাহার সহিত সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যে ও এক-