পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা
৬৫

ও আদর্শ ইয়োরোপীয় আদর্শ হইতে এতই বিভিন্ন যে যাঁহাদের চক্ষু কেবলমাত্র ইয়োরোপীয় দৃষ্টিতে অভিষিক্ত, যাঁহারা ইয়োরোপীয়দের ভাললাগা মন্দলাগার উপরে সুন্দর অসুন্দরের বিচার করেন, তাঁহাদের পক্ষে ভারতীয় শিল্পের যথার্থ বিচার করা সম্ভব নহে। যাঁহাদের ভারতীয় সমগ্র কৃষ্টির প্রতি, সাধনার প্রতি, ধর্মের ও দর্শনের প্রতি সহানুভূতি আছে, ভারতীয় কাব্য-দৃষ্টিতে যাঁহাদের চক্ষু অনুরঞ্জিত তাহারাই বুঝিতে পারেন যে ভারতীয় মর্মকথা ভারতীয় শিল্পীরা কতদূর পর্যন্ত উদঘাটিত করিতে পারিয়াছিলেন। আমার সাহিত্য-পরিচয়’ গ্রন্থে আমি প্রমাণ করিতে চেষ্টা করিয়াছি যে পরিচিতি বা পরিচয়বোধ বা Self-realisationই সৌন্দর্যবোধের জনক। ভারতবর্ষের সমগ্র মর্ম্মের সহিত যাঁহার সাক্ষাৎ সম্বন্ধ নাই, তিনি কি করিয়া ভারতীয় শিল্পের মধ্য দিয়া সেই সম্বন্ধগুলিকে আপনার মধ্যে হৃদগত করিয়া আপন অন্তরস্থ ভারতীয় মর্মবাণীর সহিত তাহার পরিচয় উপলব্ধি করিবেন!

 বাহিরের জগতের অনুকৃতি অপেক্ষা অন্তরের জগতের অনন্ত ও অমৃত সম্পদ শিল্পে ফুটাইয়া তোলাই ভারতীয়দের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল। অতি প্রাচীনকালে মহেঞ্জোদারোর শিল্পের মধ্যে আমরা ধ্যানাবস্থ নাসাবদ্ধদৃষ্টি যোগিমূর্ত্তির নিদর্শন পাই। মৃগবেষ্টিত পশুপতির মূর্ত্তি পাই, ধরিত্রীমাতার মূর্ত্তি পাই। স্মরণাতীত কাল হইতে ভারতবর্ষীয়দের চিত্ত অমর্ত্য আদর্শের দিকে নিবদ্ধ হইয়া আসিতেছিল। যখন অন্যদেশের লোকে