পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা
৮৫

জগতের প্রাণলীলার যে গভীর সামঞ্জস্য ও একতান সূচিত হইয়াছে অজন্তার চিত্রগুলি দেখিলে তাহার মর্মকথা সুস্পষ্ট ভাবে চক্ষুর সম্মুখে উদ্ভাসিত হইয়া ওঠে। এমন কি নরনারী মিথুনের প্রেমাবেশে যে পরস্পরের চুম্বন চিত্রিত হইয়াছে তাহাও যেন সহকার ও মাধবীলতার আলিঙ্গনের ন্যায় মনের মধ্যে এমন একটী পবিত্র ভাব আনিয়া দেয় যে তাহা যে বৌদ্ধবিহারের অনুপযুক্ত তাহা মনে হয় না। মনুষ্যলোক যেন উদ্ভিদলোকের সহিত একত্র হইয়া উদ্ভিদলোকের আবয়বিক লাবণ্য-বিলাসের মধ্য দিয়া আপনাকে প্রকাশ করিয়া তোলে ও মনুষ্যলোকের ক্লিষ্টতা পরিহার করিয়া সমগ্রজীবলোকের পবিত্র প্রাণধারার নির্ঝরিণী সৃষ্টি করিয়া দৃষ্টি-সম্পাতের পরিপূত স্নানে দর্শককে অভিষিক্ত করিয়া দেয়। অজন্তা দেখিলে মনে হয় যেন চতুর্থ শতকের Florence বা Umbria চিত্রশালায় আমরা দাড়াইয়া আছি। নারীচিত্রগুলির মধ্যে কামোদ্দীপকতা ও অভিলাষজনকতা ও নারী দেহের আকর্ষণ ফুট প্রতীত হইলেও তাহাদের নগ্ন দেহের সৌন্দর্য যেন পবিত্রতাকে আবহন করে; মনে হয় যেন Botticelli 'Birth of Venus' দেখিতেছি। একটা পেলব সম্পৃহতা এমন কোমল আবেশবিহীনভাবে চিত্রিত হইয়াছে যে, তাহাতে উন্মত্ত আকাঙ্ক্ষার তাণ্ডব নৃত্য আসিয়া সেই মনোহারী তপোবন সুলভ শান্ত সৌন্দর্য্যকে শরাভিঘাতে বিদ্ধ করে নাই। মানুষের শারীর লাবণ্যের মধ্যে সমস্ত প্রকৃতি যে তাহার মাধুর্য ঢালিয়া দিয়াছে এবং সেই লাবণ্যের নির্ঝরিণী যে ব্রহ্মার