পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/২২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, নবম সংখ্যা । আকুল করিয়া তুলিল ;-বহুদিনের পরিচিত একটা কণ্ঠস্বরের রুদ্ধ কাতর ক্রননধ্বনি তাহার কর্ণকুহরে থাকিয়া থাকিয়া বাজিতে লাগিল ! ব্যাপারটা একটা মানসিক ভ্রম ভিন্ন আর কিছুই নহে —মুহূৰ্ত্ত মধ্যে মিলাইয় গেল ! পর মুহুর্তেই উইলভেয়ারের বিচার ও শাস্তির গুরু অভিনয় সমাপ্ত হইয়া গেল ! ( २ ) কয়েক ঘণ্ট। পরে বিচারক থর্ণ র্তাহার পাঠাগারে বসিয়া আছেন,—গভীর চিন্তামগ্ন । সেদিন যে লোকটাকে শাস্তিদান করিয়াছেন সে যেন আজ র্তাহার বুকের ভিতর কি একটা কুরপনেয় চিহ্ন রাখিয়া গিয়াছে,— যেন কিসের একট। অস্পষ্ট স্মৃতি আসিয়া আজ র্তাহার মৰ্ম্ম দ্বারে অবিরামই আঘাত করিতেছে ! সহস। তিনি দ্বারের দিকে চাহিলেন,— প্রাণটা যেন শিহরিয়া উঠিল,—বাহিরে যেন একটা পদশব্দ শুনা গেল! বাটীর সকলেই নিদ্রিত—এত গভীর রাত্রে ওরূপে নড়িয়া বেড়ায় কে ? নীরব প্রশ্নের উত্তরে তৎক্ষণাৎ ধীরে ধীরে দ্বারটি উন্মুক্ত হইল এবং সম্মুখে এক দীর্ঘকায় ভদ্রবেশধারী ব্যক্তি আসিয়া দণ্ডীয়মান হইল। তাহার কুটিল মুখের প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়াই থর্ণ তাহাকে চিনিলেন এবং তাহার কণ্ঠ হইতে তৎক্ষণাৎ একটা বিস্ময়ের রুদ্ধ ধ্বনি বাহির হুইয়া পড়িল । থর্ণ আসন ত্যাগ করিয়া দাড়াইলেন, —র্তাহার মুখ রক্তবর্ণ ! মুহূৰ্ত্তকাল উভয়ে নীরবে দাড়াইয়া রহিলেন । “আমি ভাবিয়া ছিলাম প্রচলিত প্রথায় আপনার সহিত সাক্ষাৎ করিতে আসিলে, চয়ন—প্রতিহিংসা। আপনি হয়ত আমার সহিত সাক্ষাৎ করিতে অস্বীকার করিতে পারেন, সেই জন্ত সন্ধ্যার সময়ে যখন দ্বার খোলী ছিল, সেই অবসরে বাটীর মধ্যে প্রবেশ করিয়া এতক্ষণ লুকাইয়া ছিলাম।” আগস্তুকের কণ্ঠস্বর অতি কৰ্কশ ও মৃদু, অথচ ঈষৎ জয়দৰ্প মিশ্রিত। বিচারক ঈষৎ কম্পি তস্বর বলিলেন— “এত বক্রপথ অবলম্বন করিবার কোনও আবগুক ছিল না । অামি সাক্ষাৎ করিতাম । অস্বীকার করিব কেন ? আগন্তুক একটা কর্কশ অট্টহস্তি করিয়া উঠিল ।

  • আমি সেই অতীতে প্রতিহিংসা গ্রহণের যে প্রতিজ্ঞ করিয়াছিলাম, তাহ হয় ত’ তোমার আজিও স্মরণ আছে এবং হস্তৃত তুমি সেই জন্ত ভীত – আমি ইহাই মনে করিয়াছিলাম।”

বিচারক মস্তক উত্তোলিত করিলেন । এই ব্যক্তির আকস্মিক উপস্থিতিতে কয়েক মুহূর্তের জন্ত তিনি যেরূপ বিচলিত হইয়াছিলেন, এক্ষণে আর সে ভাব নাই,—মুখে সেই স্বাভাবিক কাঠিন্ত ও দৃঢ়ত আসিয়া উপস্থিত হইয়াছে। “আমি কাপুরুষ নহি ।” বিচারকের স্বর অতি শাস্ত । “না, তুমি কাপুরুষ নও, তুমি কেবল আমার জীবনের সর্বস্ব অপহারক তস্কর মাত্র ! আমি যে নারীকে প্রাণ দিয়া ভালবাসিতাম,— ষে ভালবাসা জগতের পক্ষে দুর্লভ, যে ভাল বাসার ধারণা স্বপ্নেও তোমার পক্ষে অসম্ভব, —তুমি সেই নারীকে অপহরণ করিয়াছিলে । সে আমার আরাধ্য দেবী ছিল ; সে আমার এই তমসাচ্ছন্ন ঝঞ্চাবিমুন্ধ ভবসমুদ্রের মধ্যে