পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, সপ্তম সংখ্যা । cদt-সতীনা। t(:) দো-সতীনা। হুগলী জেলার অন্তর্গত 'দে পাড়া’ একটি ক্ষুদ্রীয়তন পল্লীগ্রাম। তথাকার অধিবাসীদের মধ্যে কয়েকঘর কৰ্ম্মকার, কুম্ভকার ও ক্ষেীরকার মাত্র হিন্দু ; অবশিষ্ট সকলে মুসলমান। গ্রামের পূর্বদিকে বিস্তৃত ধান্তক্ষেত্র এবং তার পরেই দুষ্টটি স্বপ্রশস্ত পুষ্করিণী পথিকের মনে সুদূর অতীতের কোনো প্রাচীন স্মৃতি স্বতঃই জাগাইয়া তোলে। এই সুবৃহৎ প্রসিদ্ধ সরোবর দুইটিই “দে!-সতীন” নামে জনসাধারণের নিকট পরিচিত। এই পুরাতন বিখ্যাত সরোবর দুষ্টটির সম্বন্ধে যে প্রবাদ-কথা প্রচলিত আছে তাছা ঐতিহাসিক মূল্যরঞ্জিত না হইলেও কৌতুহলোদ্দীপক, ভাবিয়া নিম্নে তাহা প্রকাশিত কবিলাম । প্রায় ছয়শত বৎসর পূৰ্ব্বে এই স্থানের নাম ছিল, ‘দেবপল্লী’, এবং এখানে দেবপাল নামক একজন ভূপতি বাস করিতেন। র্তাহার মাতাপিতার পরিচয় পাওয়া যায় ন!— তিনি যে কত বৎসর যাবৎ এখানে বাজত্ব করিয়াছিলেন তাহাও নির্ণয় করিবাব উপায় নাই। রাজা দেবপাল প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর আবার বিবাহ করিতে অভিলাষী হইলেন। তাছার বিস্তৃত সম্পত্তি, তরুণ বয়স ও অসাধারণ রূপলাবণ্য দৃষ্টে লক্ষ্মীকান্ত নামে জনৈক রাজ্য আপন কষ্ট ইলাকে দেবপালের হস্তে অর্পণ করিতে ইচ্ছুক হইলেন । দেবপালও ইগার অপরূপ রূপ-মাধুরী দর্শনে একস্তি মুগ্ধ হইলেন। যথাসময়ে বিবাহের দিনও স্তির হইল। নিদিষ্ট দিনে দেবপাল বরবেশে মুসজ্জিত হইয়া আত্মীয় বন্ধুবান্ধবগণসহ রাজা লক্ষ্মীকান্তের বাড়ীতে উপস্থিত হইলেন। বরযাত্রী এবং কন্যাযাত্রীর দলে পরম্পরে আলাপ-পরিচয় হইতে লাগিল, উভয় পক্ষের অধ্যাপক ভট্টাচার্যগণের মধ্যে বিবিধ শাস্ত্রের বিচার ও তর্ক-বিতর্ক উপস্থিত হইল। বিবাহের লগ্ন উপস্থিত হইলে, বব সম্প্রদান স্থানে আনীত হইলেন । পুরমহিলার শঙ্খধ্বনি করিতে লাগিলেন,—বাহিরে শানাইএর সহিত নহবৎ বাজিতে লাগিল ; বহুমূল্য বস্ত্রীলঙ্কারে ভূষিতা পীঠোপরি উপবিষ্ট পাত্রীকে নির্দিষ্ট স্থানে আনা হইল। পুরোহিত ঠাকুর মন্ত্রেচারণপূর্বক সম্প্রদানকাৰ্য্য আরম্ভ করিলেন । এমন সময় সহস। রণভেরীর ভীষণ নিনাদ শ্রবণ করিয়া সকলেই সেইদিকে উৎকর্ণ হইলেন। দেখিতে দেখিতে বহু অশ্বারোহী ও পদাতিক সৈন্তপাদভরে সম্প্রদান-ভূমি কঁপিয়া উঠিল। অগণ্য সেনা ভীমববে সকলেব প্রাণে দারুণ ভীতির সঞ্চার করিয়া তোরণ-দ্বার হইতে বিবাহ স্থান অবধি দুই সারিতে বিভক্ত হইয়া দাড়াইল । বিবাহ আর হইতে পারিল না। সৈন্তগণ ইলাকে লইয়া প্রস্থান করিল। সভাস্থ সকলে চিত্রাপিত পুত্তলিকাবৎ নিশ্চল ও নিম্পন্দ হইয়া রহিল। কাহারে! মুখে একটি কথা নাই। ক্ষণকাল পরে বাড়ির ভিতর হইতে ক্ৰন্দনের ধ্বনি উঠিল, কয়েকজন দন্যদলের অনুসন্ধানে ছুটিল। ক্রমে রাত্রি অবসান হইয়া আসিলে, দেবপাল উপায়াস্তর না দেখিয়া অগত্যা ‘মালতী’ ও “মাধবী’ নামী ইলার দুই সখীকে লইয়া