পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/৩০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

iురిe ভারতী । মাঘ, ১৩১৭ পোষ্যপুত্র। جاري মাটিতে লুটাইয়া পড়িয়া মুক্ত কণ্ঠে কাদিয়া উঠিতে ইচ্ছা করিলেও সমস্ত মানসিক শক্তি প্রাণপণ বলে সংগ্ৰহ করিয়া শাস্তি সেই অদম্য প্রলোভনকে জয় করিয়া ঠোটে ঠোটে চাপিয়া দেওয়;লে পিঠ রাখিয়া পাথরের মতন শক্ত হইয়া দাড়াইয়া রহিল । গভীর রাত্রি,—বাশবনের মধ্য হইতে মধ্যে মধ্যে শৃগালের ডাক ভিন্ন আর কোন রকম সাড়াশকে কোন জীবিতপ্রাণীর অস্তিত্ব বুঝা যাইতেছিল না। মাথার উপর এক আকাশ নক্ষত্র ফুটিয়া রহিয়াছে, তাছাদের মাঝখানে রৌপ্য কিরণবধী চন্দ্র বিরাজমান । এই বৈচিত্র্যময়ী সুখেজল ধরণী, এই পরিপূর্ণ আশাবিহবল রাগিণীর অনাদিগান, এ সমস্তই ব্যথিত প্রাণী শস্তির নিকট যেন কুহেলিকা সমাচ্ছন্ন নিরানন্দ হইয়া উঠিয়াছিল । নস্তব্ধ জ্যোৎস্নায় দাড়াইয়া স্পনীনহীন প্রায় চক্ষে সে একবার অতীতের পানে ফিরিয়া চাহিল । অতীত মুখের, অতীত সাধের জীবন ! —সে কি আনন্দের কি গৌরবের দিনই গিয়াছে ! এতক্ষণ পরে শান্তির মস্তিষ্কের ভিতরে ফুটস্ততরঙ্গ একটুখানি স্থির হইয়া আসিল। শৈশবের সেই নিশ্চিন্ত সুখ কত মধুর ! সেই তাহারা দুটি ছোট ভাই বোনে একসঙ্গে খেলা করিত। এক সঙ্গে ঘুমাইত, একসঙ্গে দুটি ছোট প্রজাপতির মতই তাহাদের বাগানে ছুটয়া বেড়াইত, ছোট পাখীদের মত আপনার মনে গান গাহিত, হাসিত, খেলা করিত । জগতে আর কাহার ও সহিত কি শাস্তির পরিচয় ছিল না ? ছিল—ছিল সবই গিয়াছে ! ক্ষুদ্র একখানিমাত্র হৃদয়-তাহার উপরে কত দিক হইতে কতখানি স্নেচ বর্ষিত হইত । কি অপূৰ্ব্ব সে মুখ কি অনাবিল সে শান্তি ! শাস্তির চোখ দিয়া হুহু করিয়া জল ঝরিয়া পড়িল । সে স্বপ্ন তাহার কেন ভাঙ্গিল, কোনো রকমেই কি আর সেই অতীত দিনে ফিরিয়া যাইতে পারেন ? হে ভগবান, শুধু একবার শুধু একটিবার ? “এখনে আপনি জেগে আছেন বৌদি ?” এই কথাটি শুনিয়াই সে চমকাইয়া উঠিয় চাহিয়া দেখিল,—যোগেশ । যোগেশের আবির্ভাবে সহসা সচেতন হইয়া শান্তি শিহরিয়া উঠিয়া দেখিল, স্বপ্নের পরিবর্তে বাস্তব তাহার বিরাট অন্ধকার ও অপর্যাপ্ত বেদন লইয়া স্তব্ধ রজনীর অবিচ্ছিন্ন রাগিণীর তালে জাগিয়া রহিয়াছে, অসহায় সে ইহারই মাঝখানে একেবারে একা । যোগেশের দ্রুত নিশ্বাসেব শব্দ সহসা সেই নিস্তব্ধতা ভঙ্গ করিয়া শাস্তির নিম্পন্দ প্রায় শরীরে শক্তি সঞ্চালন করিয়া দিয়া উত্তেজনায় তাহার মাথার ভিতবে দর দপ, করিয়া উঠিল। বিস্ময়গন কোমল কণ্ঠে যোগেশ কহিল “বোঁদি তুমি কি চা ও অমীয় ভাল করে বুঝিয়ে দাও—ত । তুমি যা বলবে আমি তাই করতে রাজী আছি, শুধু তুমি বলে একবাব,—নিজের মুখে হুকুম দাও—* শাস্তির চোখের সম্মুখে কুহেলিকাময়