পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/৩৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতী । মাঘ, ১৩১৭ পাণ্ডুয় ছোট খাট গ্রাম হুইলেও পাণ্ডুয়া ইতিহাসে প্রসিদ্ধি লাভ কৰিয়াছে। ইহা চুচড়া হইতে প্রায় ১৭ মাইল দূরে অবস্থিত। প্রাচীনত্বে হুগলি জেলার মধ্যে ইহা সপ্তগ্রামের অনুরূপ । কথিত আছে এক সময় ইহা জনৈক হিন্দু নৃপতির রাজধানী ছিল । ১০৪০ খ্ৰীষ্টাব্দে সা সোফি (Shah Sof) নামক এক মুসলমান নরপতি উক্ত নৃপতিকে যুদ্ধে পরাস্ত কবিয়া পাণ্ডুয়া অধিকার করেন। এই পাণ্ডুয়৷ অধিকার সম্বন্ধে নিম্নলিখিতরূপ একটি জনশ্রীতি আছে । একদা পুত্রের জন্মোৎসব-উপলক্ষে পাণ্ডুয়ারাজ এক ভোজের আয়োজন করেন । ঠিক সেই দিনই তাহার এক মুসলমান কৰ্ম্মচারীও আপন বন্ধুবান্ধবদিগের মধ্যে এক প্রতিভোজের আয়োজন কবেন, এবং সেই উপলক্ষ্যে একটি গে বৎস নিহত হয় । হিন্দুদিগের অসন্তোষ উৎপাদন ভয়ে তিনি নিহত গো-বংসের অস্থি ও মাংসাদি কোন নিভৃত স্থানে প্রোথিত করান । কিন্তু রজনীযোগে শৃগালের সেই সকল অস্থি মাংসাদি মৃত্তিক হইতে প্রকাশু রাজপথে টানিয়া বাহির করে। পরদিন প্রত্যুধে এই ব্যাপার দেখিয়া সমুদয় হিন্দু অধিবাসী উত্তেজিত হইয়া উঠে এবং রাজপুত্রকেই সকল অমঙ্গলের কারণ বিবেচনা করিয়া প্রথমে তাহাকে হত্যা করিয়া পরে মুসলমানদিগের উপর ভীষণ অভ্যচার আরম্ভ করে । মুসলমানের পাণ্ডুয়ারাজের নিকট সাহায্য প্রার্থনা করিয়া নিরাশ হয় ; তখন তাহার দিল্লীতে পলায়ন করে এবং সেখানে যষ্টিয়া সমাটের নিকট তাঁহাদেব সমুদয় দুঃখ নিবেদন কবে । সম্রাট সমস্ত ব্যাপার জানিয়া পাণ্ডুয়ারীজের বিরূদ্ধে অভিযান প্রেরণ করেন । কয়েক বৎসর ধরিয়া ক্রমাগত যুদ্ধের পর হিন্দুব সম্পূর্ণরূপে পৰাভূত হয়। কাহারো মতে পাণ্ডুয়ারাজপুত্রের এ বং উক্ত মুসলমান কৰ্ম্মচারীর পুত্ৰেৰ জন্মোৎসব একই দিনে হয়। সেই দিনই ঐ মুসলমান কৰ্ম্মচারী গো-বৎস হত্যা করিয়া আপন বন্ধুবান্ধবগণের প্রতিভোজ দিয়াছিলেন। এবং হিন্দুৰ রাজপুত্রকে হত্য কবে নাই,—মুসলমান কৰ্ম্মচারীর পুত্রকেই হত্যা করিয়াছিল। উক্ত যুদ্ধের প্রারম্ভে মুসলমানের বহুবার হিন্দুদের নিকট পবাস্ত হয়। কথিত আছে পাণ্ডুয়া সহরের সন্নিকটে অলৌকিক প্রভাব সম্পন্ন এক পবিত্র কুণ্ড ছিল । বুদ্ধকালে হিন্দুরা এই কুণ্ড ইষ্টতে জল লইয়া অtহ হ সৈন্তদিগের গাত্রে ছিটাইয়। দিলে সেই জলস্প,শ তাহারা তখনই আরোগ্যলাভ করি ত এবং প্রবল উৎসাহে পুনরায় মুসলমান দিগকে আক্রমণ করিত। এই বিপদ হইতে রক্ষণ পাইবার জন্ত মুসলমানগণ এক অভিনব কৌশল অবলম্বন করিল। তাহারা জানিত হিন্দু গো-মাংস স্পর্শ করে না । একদিন তাহার এক খণ্ড গে!-মাংস লইয়। হিন্দুদিগের সমক্ষেই সেই কুণ্ডের মধ্যে তাহ ফেলিয় দেয়। অতঃপর হিন্দুরা আর সে জল ব্যবহার করিত না, – কাজেই মুসলমানেরা অতি সহজে হিন্দুদিগকে পরাস্ত করিতে পারিল। যে স্থানে এই যুদ্ধ সংঘটিত হইয়া