পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, সপ্তম সংখ্যা । পরিচিত লেখকের লেখাটা সহজেই চিনিতে পারা যায়। র্যfর বঙ্কিমচন্দ্র বা রবীন্দ্রনাথের লেখা ভাল করিয়া পড়িয়াছেন, বিপুল সাহিত্য সংগ্রহের ভিতর হইতেও তাদের পক্ষে এই দুই সাহিত্যরথীর রচনা পৃথক্ করা একটুও কঠিন কাজ নহে। আর ইহাও কি সত্য নহে যে, বঙ্কিমচন্দ্রের রচনা যখন পড়ি, তখন তার বর্ণে বর্ণে, পংক্তিতে পংক্তিতে, বঙ্কিমচন্দ্রের মানস-রূপ আমাদের মানসচক্ষে আসিয়া উপস্থিত হয় ? রবীন্দ্রনাথের লেখা যখন পড়ি, তখন কেবল র্তার লেখা নয়, উপরস্তু রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং আমাদের মনের মাঝখানে আসিয়া উপস্থিত হন ? প্রত্যেক ব্যক্তির কণ্ঠে যেমন এক একটা বিশেষ স্বর অাছে, আর এই মুর যেমন তার নিজস্ব বস্তু, ইহাতে র্তার বিশেষত্ব বা ব্যক্তিত্বটুকুকে প্রকাশ করে ; সেইরূপ প্রত্যেকের ভাষাতেও একটা বিশেষ মুর আছে, এ মুর কণ্ঠের নহে, মনের ; আর তাদের মনের, চিস্তার যে বিশেষত্ব বা ব্যক্তিত্বটুকু আছে, তাছাই এই মনের সুরের ভিতর দিয়া প্রকাশিত হইয়া থাকে। আর এই যে ভাষার স্বর, ইহার ভিত্তর কোন দিক্ দিয়া এই বিশাল বিশ্বসমস্তার মীমাংসা করিতেছেন, কে কোন ভাবে এই জগৎটাকে দেখিতেছেন, এটিও স্বল্পবিস্তর বুঝিতে পারা যায়। কারণ এই বিশ্ব-সমস্তাই আমাদের চিন্তার মূল বিষয়ীভূত হইয়া রহিয়াছে। এই ইদং ও এই অহং— এই দুই বিরাটতত্ত্ব লইয়াই মন দিবানিশি ব্যস্ত রহিয়াছে। এই অহং ও ইদংএর জটিল সম্বন্ধের অর্থ কি, এই প্রশ্নের মীমাংসা করিবার চেষ্ট হইতেই মানুষের সর্বপ্রকার শাস্ত্র ভারত ও বিলাত । QS)を সাহিত্য, ও শিল্পবিজ্ঞানাদির প্রতিষ্ঠা হইয়াছে। আমাদের লঘুগুরু, ক্ষুদ্রবৃহৎ, সকল আলোচনা ও সকল সমস্তার পশ্চাতেই এই বিশাল বিশ্বসমস্ত সতত দাড়াইয়া আছে। আমরা তাহাকে জ্ঞানে সকল সময় ধরিতে পারি না, সত্য ; কিন্তু ধরি আর না ধরি, তাহাকে অতিক্রম করিয়া, ক্ষুদ্রবৃহৎ, বিশেষ-নিৰ্ব্বিশেষে, কোনো সিদ্ধান্তেরই প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয় না। কোনো জ্ঞানই, ফলতঃ সম্ভব হইতে পারে না। আমাদের শারীর ধৰ্ম্মে ও মানস ধৰ্ম্মে এই যে এক একটা বিশেষত্ব বা নিজত্ব আছে, যে বিশেষত্ব বা নিজত্বটুকুতে তোমাকে আমা হইতে, আমাকে তোমা হইতে পৃথকৃ করিয়াছে, ও আমাদের উভয়কে, ও জগতের প্রত্যেক মানুষকে, অপর সকল হইতে স্বতন্ত্র করিয়া রাথিয়াছে, ইহাই আমাদের প্রত্যেকের ব্যক্তিত্ব। এইটুকুই আমাদের মৌলিকত্ব। ইহাই আমাদের নিজস্ব বস্তু। আর ব্যষ্টিভাবে, তোমার আমার এই যে ব্যক্তিত্ব, সমষ্টিভাবে, তাহাই প্রত্যেক জাতির জাতিত্ব। আমাদের প্রত্যেকের চেহারা যেমন স্বতন্ত্র, আমাদের স্থর যেমন আলোহিদা, আমাদের চিন্তার ধরণ যেমন পৃথক পৃথকৃ,সেইরূপ সমষ্টিভাবে জগতের ভিন্ন ভিন্ন জাতিরো চেহারা স্বতন্ত্র, মুর স্বতন্ত্র, সমাজগঠন ও চিন্তার ধরণ, এ সকলই স্বল্পবিস্তর স্বতন্ত্র ও পরস্পর হইতে বিভিন্ন। এই যে স্বাতন্ত্রা, এই যে বিভিন্নতা, এই যে বিশেষত্ব ইহারই নাম জাতিত্ব। আর এই যে জাতিত্ব, ইহা প্রত্যেক জাতির শারীর ধৰ্ম্মে ও মানস ধৰ্ম্মে, উভয়ক্ষেত্রেই প্রকাশিত হইল। থাকে। এক ব্যক্তির চেহারা যেমন আর এক ব্যক্তির চেহারা হইতে ভিন্ন, সেইরূপ