পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/১৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭শ বর্ষ, অষ্টম সংখ্যা ছিল। বহু যুবক তাহার পাণিপ্রার্থ হইলেও, যুবতী কাহাকেও কোনও প্রকার উৎসাহ প্রদান করিত না । প্রত্যাখ্যাত যুবকগণ নিতান্ত মনঃক্ষুণ্ণ হইয় প্রত্যাবর্তন করিত। কিন্তু কিছুকাল পরে যুবতী এক অপরিচিত সুন্দর যুবককে অনুগ্রহ প্রদর্শন করিতে আরম্ভ করিল। উভয়ের পরিচয় অত্যন্ত্রকাল মধ্যে গভীর ভtলবাসায় পরিণত হইল। অবশেষে উভয়ে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হইল। যথা সময়ে যুবতী একটী সন্তান প্রসব করিল। যুবক অত্যন্ত আহ্নাদ সহকারে স্থতিকাগৃহে প্রস্থতি ও সন্তানের পরিচর্য্যা করিতে লাগিল। কিন্তু তাহদের সুখ বহুদিন স্থায়ী হইল না, কারণ ইতোমধ্যে যুবকের কৰ্ম্মফলভোগের সময় উপস্থিত হইল। সন্তানজন্মের সপ্তাহকাল মধ্যে একদিন যুবক প্রস্তুতি ও শিশুকে শুশ্রুষা করিতেছিল। এমন সময় যুবক ক্রমাগত তিনবার সংজ্ঞাহীন হইয়া আসন হইতে ভূমিতে পতিত হইল। তখন সহসা অতীত জীবনের সমস্ত ঘটনা একে একে তাহার মানসপটে উদিত হইতে লাগিল, এবং সে বুঝিতে পারিল তাহার কৰ্ম্মফল ভোগের সময় আসন্ন হইয়া আসিয়ছে । তাহার শারীরিক ও মানসিক যাতন যুবতীর মাতার সতর্ক দৃষ্টি এড়াইতে পারিল না। যুবতীর মাতা পুনঃ পুনঃ তাহার আকস্মিক অসুস্থতার কারণ জিজ্ঞাসা করাতে, যুবক বলিতে লাগিল :– “ক্ষবি নগরের অনতিদূরবর্তী কোনও গ্রামে পোটলবান নামক এক বৃদ্ধ ও মে জে নামী তদীয় পত্নী বাস করিত। তাহারা ধীবরবুক্তি দ্বারা অতিকষ্টে জীবিক অর্জন করিত। একদিন বহুমৎস্তসহ একটি জ্যোতিৰ্ম্ময় ডিম্ব তাঁহাদের জালে পতিত হইল। ডিমটী ধীবরদম্পতি সযত্নে রাথিয় দিল । কালক্রমে ডিম্ব হইতে একট কুন্ত্রীর শাবক নির্গত হইল। তৎকালে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ছিল বলিয়া কুম্ভীর শাবকের নাম ঙ্গা মো (২ ) ইয়েইক্‌ (গগন-ঘনষ্ঠাম ) রাখা হইল। ধীবরদম্পতি কুটার পার্শ্বে একটা ক্ষুদ্র জলাশয় খনন করিয়া তন্মধ্যে শাবকটকে রাখিয়া দিল। তাহারা সন্তানস্নেহে কুম্ভীর চাউকৃ-ওয়াইঙ্গ, পাগোদা t; సెల్లీ শাবককে লালন পালন করিতে লাগিল। ক্রমে কুম্ভীরশাবক বয়ঃ প্রাপ্ত হইল। ক্ষুদ্র জলাশয়ে এখন আর তাহার স্থান সঙ্ক লীন হয় না। তখন গ্রামপ্রাস্তবত্তী নদীতে একটী বংশনিৰ্ম্মিত ঘের প্রস্তুত হইল এবং কুম্ভীরশাবককে তথায় স্থানান্তরিত করা হইল। এই ঘের প্রস্তুত করিতে একশত বংশখণ্ডের প্রয়োজন হইয়|ছিল বলিয়া গ্রামের নাম পরিবর্তিত করিয়া ওয়-টইয় ( বংশ-শত) রাখা হইল । “পরিণত বয়স প্রাপ্ত হইলে কুন্তীর শাবক বংশপ্রাচীর ভগ্ন করিয়া মুক্তভাবে নদীজলে বিচরণ করিতে লাগিল। ধীবরদম্পতি তথাপি উহাকে পূর্ববৎ স্নেহ করিত এবং স্বহস্তে খাদ্যদ্রব্য প্রদান করিত । “একদিন বৃদ্ধ ধীবর খাদ্যদ্রব্য লইয়| কুম্ভীরশাবকের সমীপবৰ্ত্তী হইলে, কুম্ভীরশাবকের পশিব প্রবৃত্তি প্রবল হইয়া উঠিল। সে পিতৃতুল্য বৃদ্ধ ধীবরকে বধ করিয়া তাহাকে উদরসাৎ করিল। তৎপর সেই অকৃতজ্ঞ কুন্তীয়শাবক গা মে ইয়েইকু তথা হইতে রেসুন নদীতে গমন করিল। রেঙ্গুন নদীতে তিনটা কুম্ভীরণীর সহিত তাহার সাক্ষাৎ হইল। কুম্ভীরণীক্ৰয় গা মে ইয়েইক্‌কে তাহাদের রাজ্যে প্রবেশ করিতে দেখিয় তাহাকে যুদ্ধে আহবান করিল। জী মে ইয়েইক্‌ তাহাদিগকে যুদ্ধে পরাস্ত করিয়া বিজয়োল্লাসে নদীমধ্যে ইতস্তত: বিচরণ করিতে লগিল এবং নদীর সর্বত্র স্বীয় প্রভুত্ব স্থাপন করিল। “ঙ্গা মে ইয়েইক্‌ কুম্ভীর হইলেও কোন পল্লীদেবতার অনুগ্রহে যে কোন জন্তুর রূপ ধারণ করিতে পারিত। যখন সে ইয়ে-গিন নগরের সমীপে উপস্থিত হইল, তখন এক সুন্দর যুবপুরুষের রূপ ধারণ করিয়া নগরের মধ্যে সৰ্ব্বাপেক্ষ সুন্দরী যুবতীর পাণিগ্রহণ করিল। মুবতীর গর্ভে তাহার এক সন্তান জন্মিল—” এই পৰ্য্যন্ত শ্রবণ করিয়া নগরাধিপপত্নী সবিস্ময়ে বলিয়া উঠিলেন –“বৎস, গল্পটার সহিত তোমার জীবনের বহুপরিমাণে সাদৃশ্ব লক্ষিত হইতেছে।” বিষন্নচিত্ত যুবক উত্তর করিল, “মাতঃ, বস্তু ও ব্যক্তি (২) মো অর্থে আকাশ, বৃষ্টি । সংস্কৃত "মেঘ" শব্দের অপভ্রংশ।