পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/১৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭শ বর্ষ, অষ্টম সংখf মেরে ফেলেন। সেটা ষ্টিফেনের অৰ্দ্ধাঙ্গী ছিল ; মৃত্যুর পর তার আত্মা আমার শরীরে প্রবেশ করে। আমি একদিন একটা বনের ভিতর বেড়াচ্ছিলুম এমন সমম ষ্টিফেনো এসে আমার পায়ের কাছে কুণ্ডলী পাকিয়ে পড়ল। আমি তাকে বাড়ী নিয়ে এলাম। সেই রাত্রেই ম আমায় স্বপ্নে দেখা দিয়ে সকল কথা ব’লে যান। ষ্টিফেনোর বংশ খুব প্রাচীন ও পূজ্য। ওর পূর্বপুরুষরা পাচফণী সাপ । এত দিনে আমি তার বিশ্বাস হারিয়েছি ; কি জানি কি প্রতিশোধ সে নেবে ।” আমি অজস্র চুম্বন দানে তাহার ভয় ও উদ্বেগ দূর করিলাম। সে কি পাগল ?— কিন্তু তাহা হইলেও সে যে কোন সন্ত্রাস্ত লোকের প্রণয়িনী হইতে পারিত ;—এমনি নিখুত তাহার রূপ ! আর সে পাগল হইলেও প্রণয়ের বলে যে তাহাকে আমি আরোগ্য করিতে পারিব তাহা আমার ধ্রুব বিশ্বাস ছিল। প্রাতে আমি তাহার জন্য কিছু ফল আনিতে যাইতেছিলাম, কয়েক মিনিট পরে ফিরিয়া আসিয়া দেখিলাম সে ঘুমাইয় পড়িয়াছে ; কিয়ৎ ক্ষণ পরে তাহার নয়ন পল্লব উন্মুক্ত হইল ; দেখিলাম তাহাতে ভাবহীন অদ্ভুত দৃষ্টি থেলিয়া বেড়াইতেছে ; বদন কষ্টব্যঞ্জক ঈষৎ হাস্যময়। অঙ্গুলিগুলিও দৃঢ় মুষ্টিবদ্ধ ! প্রতিশোধ ৯২৫ আমি নিরাশ ব্যাকুল স্বরে ডাকিলাম,— “ফস্টাইন্‌!” কোন উত্তর পাইলাম না ; তাহার দেহে একটু স্পন্দনও অনুভূত হইল না। তাহার বক্ষের উন্মুক্ত অংশে সেই সৰ্পেব চিত্র লক্ষিত হইল। ক্ষণমধ্যে আমি সবিস্ময়ে দেখিলাম সেই চিত্র বাস্তবে পরিণত হইল। তাহার হৃদয় হইতে ধীরে ধীরে সৰ্পের সুবিস্তৃত ফণী উখিত হইতেছিল। তাহার ক্রোধ রঞ্জিত ভীষণ দৃষ্টি তখন আমারই উপর সংবদ্ধ ! “সে সেই সর্পরাজ-ষ্টিফেনে!” উদ্বেগ আকুলিত স্বরে আমি ডাকিলাম,—“ফস্টাইন্‌!” প্রত্যুত্তরস্বরূপ সেই ভয়াবহ সৰ্প ভূমে অবতরণ করিয়া আমার দিকে অগ্রসর হইতে লাগিল। দ্রুতপদে আমি গৃহ হইতে নিস্ক্রান্ত হইলাম। আমার শয়ন কক্ষে একটী পিস্তল ছিল ক্ষিপ্ৰ হস্তে সেইট লইয়া পুনরায় সৰ্পের সম্মুখীন হইলাম। পিস্তলের ধূম ও অগ্নি উদগীরণের সঙ্গে সঙ্গে ষ্টিফেনোর প্রাণহীন দেহ ভূলুষ্ঠিত হইল। দ্রুতপদে ফস্টাইনের পাশ্বে উপস্থিত হইয়া দেখিলাম তাহার দেহ তখন তুষারশীতল ; প্রাণপক্ষী বহুক্ষণ সে দেহ পিঞ্জর ত্যাগ করিয়াছিল । ষ্টিফেনে তাহার জাতীয় স্বভাবসুলভ প্রতিশোধ গ্রহণ করিয়াছে। আবার প্রহরপ্রসাদ বন্ধ্যোপাধ্যায়।