পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/২০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

وهنا چ অরণিতে অগ্নির আবির্ভাব হয় । এইরূপে কাৰ্য্যকারণ প্রায়শঃ ঘটনাপারম্পৰ্য্যে আত্মবিকাশ করে । বিজয়াদশমী উৎসবের অব্যবহিত পূৰ্ব্বে কোন জাতীয় অনুষ্ঠান দেখা যায় ? কাহার পশ্চাতে এই জয়দায়িনী দশমীর অভু্যদয়—তাহার দিকে ফিরিয়া দেখ । মহালয়া—অর্থাৎ পিতৃশ্ৰাদ্ধ ও পিতৃতর্পণই বিজয়ার পূৰ্ব্বগামী মহানুষ্ঠান। হে হিন্দু এ তথ্যের গভীরতা ও সার্থকতাবিষয়ে ধ্যানশূন্ত হইও না। যদি বিজয় চাও, যদি তেইশবার নিষ্ফল হইয়াও চব্বিশ বারের বারও অন্ততঃ সফলতা কামনা কর তবে তোমাদের পুৰ্ব্বপুরুষগণের কীৰ্ত্তির ধ্যানে অবগাহিত হও, সেই সকল মহৎকার্য্যকলাপের প্রতি শ্রদ্ধাযুক্ত হও, বিশ্বাস কর যে সে সকল তোমার আমার মত রক্তমাংসের শরীরের দ্বারা অনুষ্ঠিত হইয়াছে এবং আবার অনুষ্ঠিত হইতে পারে, তাহদের পদাঙ্গাতুসরণের দ্বারা তাহীদের তপণ কর । কেবলমাত্র ব্রাহ্মণ ভোজন করাইয়া, কেবলমাত্র ভৌতিক পিণ্ড ও জলদান করিয়া আপনাকে ঋণমুক্ত জ্ঞান করিও না । তদপেক্ষা কঠিন হইতে কঠিনতর সাধন গ্রহণ কর । প্রথমতঃ জান তাহাদের কীৰ্ত্তিমাৰ্গ কোন কোন দিশায় রেখা কাটিয়া গিয়াছে, জাতীয় ইতিহাসের অনুশীলন, অনুসন্ধান ও গঠন কর। তারপর সেই ঐতিহাসিক অতীতকে বর্তমানে সত্য করিয়া তোল। তেমনি সাহসিক, তেমনি বাণিজ্যদক্ষ, তেমনি সুনাবিক, তেমনি দিগ্বিজয়ী, তেমনি সহিষ্ণু, জ্ঞানী, তেমনি কৰ্ম্মী হও । তাহীদের মার্গমুসরণ—তাহদের প্রিয়কাৰ্য্য সাধনই তাহদের প্রকৃত উপাসন, ভারতী অগ্রহায়ণ, ১৩২০ র্তাহীদের প্রতি প্রকৃষ্ট শ্রদ্ধা প্রদর্শনের পন্থা । জানিও এই পিতৃপূজার প্রভাবেই জাপানীরা এত বড় স্বদেশভক্ত, সফলপ্রয়াস ও বিজয়শালী জাতি হইয়াছে। তোমরাও পিতৃশ্ৰাদ্ধ ও পিতৃতর্পণেব মরা কাঠামোখান৷ ফেলিয়া তার জীবন্ত প্রাণের ভিতর পৌছাও । এই পূৰ্ব্বপুরুষ প্রতি ও পূৰ্ব্বপুরুষ তর্পণেচ্ছ তোমাদের মাতৃভূমির জন্ত সমস্ত কার্য্যে প্রেরণা দান করুকৃ । যে সকল বড় বড় মহাপুরুষেরা এই ভারতভূমে লয় পাইয়াছেন— রাম, কৃষ্ণ, অর্জন, যাজ্ঞবল্ক্য, বশিষ্ঠ, বিশ্বামিত্র, বুদ্ধ, শঙ্কর, গৌতম, কৌটিল্য, অশোক প্রভৃতি —র্তাহীদের তেজের অংশ আবার তোমার শরীরে ও আত্মায়, তোমার কার্য্যে ও ভাবে পুনরুজ্জীবিত হইয়া উঠিবে এই তোমার উচ্চ অভিলাষ হউক, র্তাহীদের আদর্শে পরিক্ষীণ হইবে না—এই মহা লক্ষ্য হউক । পদে পদে লক্ষ্যভ্রষ্ট হইতে পার, কিন্তু যতবার পড়িবে আবার উঠিবে, আবাব সেই লক্ষ্যের দিকে দৃষ্টি উৎপতিত করিবে—এই চেষ্টা, এই দুরূহ বাসনাই তোমাকে জাতীয় মৃতকল্প অবস্থায় সঞ্জীবিত রাখুক্‌। তাহদের তর্পণ, তাহাদের প্রসন্নত, তাহদের অভিনন্দন মাথায় রাথিয়া অগ্রসর হও ; যদি ইহা পার তবে এই পুণ্য দশমী তিথিতে শ্রীরামচন্দ্রের দ্যায় বিজয়ী তোমারও করতলগত হইবেন । বৎসরান্তে একবার ভাবিও, কি করিলাম ? র্তাহীদের পথে চলিয়াছি কি ? কি কেবল নিজেরই সঙ্কীর্ণ স্বার্থের চক্রে ঘুরিয়া মরিয়াছি ? বিজয়পথের যাত্রী হুইয়াছি কি পরাজয় কোটরে আবদ্ধ আছি ?• ক্রসরলা দেবী।