পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/২৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭শ বর্ষ, নবম সংখ্যা প্রেরণ করিলেন। সেনাপতি আফজুল খ৷ কোমর বাধিয়া শিবাজীকে ধরিয়া আনিতে বাহির হইলেন । সে সময়ে শিবাজী মহাবলেশ্বর হইতে অনতিদূরে প্রতাপগড়ের পাহাড়ে। সেই পাহাড়ের উপর দুর্গ নিৰ্ম্মিত হইয়া প্রকৃতির বলের উপর কৃত্রিম বল যোজিত হইয়াছে । শিবাজী এই দুর্গে ব্যান্ত্রের দ্যায় বসিয়া শিকার নিরীক্ষণ করিতেছেন। আফজুল খাঁ তাহাকে ধরিতে আসিতেছেন। পথিমধ্যে তুলজাপুরের মন্দির আক্রমণ করিয়া হিন্দুদের যথেষ্ট অপমান করিয়াছেন। স্লেচ্ছদেব উপর হিন্দুদিগের জাতিবৈর দ্বিগুণ জলিয়া উঠিয়াছে। শিবাজী চরমুখে সকল সংবাদ পাইতেছেন। আফজুল খ। অনেক সৈন্তসামন্তে পরিবৃত, তাহার সঙ্গে সন্মুখ যুদ্ধে জয়লাভের সম্ভাবনা নাই, ছলে ও কৌশলে তাহাকে মারিতে হইবে। শিবাজী নবাব সাহেবের নিকট দূত পঠাইলেন ও ভয়ের ভান করিয়া এই রূপ দেখাইতে লাগিলেন যে তিনি নবাবের অধীনতা স্বীকার করিতে এখনি প্রস্তুত, কেবল প্রাণভয়ে ধরা দিতে নারাজ। খ সাহেব যদি প্রতাপগড়ে অধীনের সাক্ষাৎকারে সন্মত হন তাহ হইলে মুখে সকল কথা হইবে । অবশেষে তাহাই সাব্যস্ত হইল। নবাব কোন দুরভিসন্ধি মনে না আনিয় শিবাজীর সহিত সহজভাবে সাক্ষাৎ আমার বোম্বাই প্রবাস సె$4 করিতে চলিলেন – একজন মাত্র সঙ্গী, পরিচ্ছদের মধ্যে এক পাতলা মসলিনের কাপড়, আর একটি সোজা তলবার—সে শুধু অলঙ্কারের জন্ত,--ব্যবহারের মানসে নয় । লেহারাগণ যথানির্দিষ্ট স্থানে পাল্কী নামাইল কিন্তু শিবাজী সেখানে নাই। দূর হইতে দুজন মানুষ দেখা যাইতেছে — ভয়ে ভয়ে অতি সন্তপণে তাহদেব পদক্ষেপ । বাহিরে দেখিতে শিবাজী নিবস্ত্র কিন্তু ভিতরে ভিতরে তিনি ‘ভবানী তলবার ও ‘বাঘনখ’ গুপ্তাস্ত্রে সুসজ্জিত ৷ বাহিবে সামান্ত শুভ্র বেশ কিন্তু ভিতরে তিনি লৌহবৰ্ম্মে আচ্ছাদিত । শিবাজী ক্রমে অগ্রসর হইলেন –খ সাহেব র্তাহার সঙ্গে দস্তুব মত কোলাকুলি করিতে গেলেন। কিন্তু শিবাজীর সে ভালুকের আলিঙ্গন--র্তাহার হস্তে প্রচ্ছন্ন ‘বাঘনখ ছিল তাহার আঘাতে নবাবের উদর বিদীর্ণ হইল। বাঘনখে যাহা হইবার বাকী ছিল ভবানী খড়েগ তাহ শেষ করিয়া ফেলিলেন। (১) এদিকে পূৰ্ব্বসঙ্কেত অনুসাবে ভেঁপু, বাজিয়া উঠিল । কামানের শব্দে প{চবার দিগ দিগন্ত ধ্বনিত হইল । নীচে মুসলমান সেনা অপ্রস্তুত ভাবে ছিল, শিবাজীর মাওলীবা চারিদিক্ হইতে তাহদের উপর গিয়া পড়িল। প্রত্যুষে ১৫০০ অশ্বারোহী সেনা সদৰ্পে কুচ কবিয়া পাহাড়ের নীচে আসিয়া বিশ্রাম করিয়াছিল, তাহদের মধ্যে সেই দুৰ্দ্দশার কাহিনী বলিবার জন্ত যে (১) স্ববিখ্যাত মারাঠী ইতিহাস-লেখক গ্রন্ট ডফের এইরূপ বর্ণনা । অন্ত লেখকের বলেন যে উভয় পক্ষেরই মনে মনে দুরভিসন্ধি ছিল– কে কাহাকে ধরিতে পারে উভয়েরই এই মনোভাব। কেহ কেহ বলেন শিবাজীর উপর নবাবেরই প্রথম আক্রমণ-শিবাজীর আত্মরক্ষার্থে নবাবকে মারিতে হইল। কিন্তু গুপ্তান্ত্রের ব্যবহার ও পূৰ্ব্বসঙ্কেত অনুসারে সৈন্সের আক্রমণ–এই সকল দেখিয়া প্রচলিত প্রবাদই সমুলক বলিয়া তনুমান হয়।