পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/২৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭শ বর্ষ, নবম সংখ্যা ব্রাহ্মণত্ব, আর্য্যদের মধ্যে দৃঢ়ীভূত করিতে পারেন, তাহার জন্ত প্রাণপণে চেষ্টা করিয়া অবশেষে কৃতকাৰ্য্য হইয়াছিলেন । অথৰ্ব্বণগণ ক্রমশঃ ইরাণ হইতে ভারতবর্ষে আসিয়া বাস করেন এবং তাহীদের ধৰ্ম্মমত এ দেশে প্রচলিত করেন । আর্য্যের বরাবরই বৈদিকধৰ্ম্ম মানিয়া আসিতেছিলেন, এখন তাহাদের মধ্যে হঠাৎ একটা নুতনধৰ্ম্ম, একটা নুতন সামাজিক প্রথা আসিয়া পড়িল। এই নুতন ধৰ্ম্ম, এই নুতন সামাজিক প্রথা আৰ্য্যগণ প্রথমে সহজে গ্রহণ করেন নাই । এই কারণে প্রথমে অথৰ্ব্বণদিগের সহিত র্তাহীদের মহাবিরোধ উপস্থিত হইয়াছিল । পরশুরাম নামে একজন অথৰ্ব্বণ নিজ দলবল সহ আর্য্যদের সহিত তুমুল যুদ্ধ বাধাইয়াছিলেন। অবশেষে র্তাহারই জয় লাভ হয় । অথৰ্ব্বণের একটি নুতন বেদ রচনা করেন। ইহার নাম অথৰ্ব্ববেদ । বিদেশী কর্তৃক লিখিত বলিয়া তখনকার ভারতবাসীর মধ্যে শূদ্রগণের উপর এই ব্রাহ্মণগণের কোপানল অতি নৃশংস ভাবে নিপতিত হইয়াছিল । কারণ ব্রাহ্মণগণ দেখিল লোক সংখ্যায় শূদ্ৰজাতি ভারতবর্ষের সৰ্ব্ব প্রধান জাতি । ইহার যদি লেখাপড় শিখিতে পায়, যদি ইহার আর্য্যদের সমকক্ষ হইবার জন্ত আর্য্য ভাবে শিক্ষিত হয়, তাছা হইলে তাহাদের ব্রাহ্মণত্ব তাহাদের প্রভুত্ব এই শূদ্র জাতির দ্বারা লোপ পাইবে। এই ভয়ে তাহারা শূদ্র জাতির প্রতি এত নিৰ্দ্দয়ত প্রকাশ করিয়া গিয়াছেন। এবং শূদ্র জাতিকে এত কঠোর শাসনে রাধিতেন। কিন্তু এক সময়ে এই শূদ্র জাতির ঋষি ও ব্রাহ্মণ ፳ፃቑ দ্বারা ইহাদের ব্রাহ্মণত্ব ও প্রভুত্ব নিৰ্ম্মল হইয়াছিল । আর্য্যর যখন প্রথমে ভারতবর্ষে আসেন, অনার্য্যের সহিত র্তাহীদের বিশেষ শত্রুভার ছিল । কিন্তু যখন অনার্য্যগণ শাস্তভাব ধারণ করিলেন, আর্য্যরাও র্তাহীদের প্রতি শক্ৰতাচরণে বিরত হইলেন । প্রাচীন গ্রন্থে দেখিতে পাওয়া যায় যে, আর্য্যর অনার্য্য কন্ত বিবাহ করিতেন । আর্য্যের ঔবসে দাসকদ্যার গর্ভের সন্তানসন্ততিগণ আর্য্য ভাবে আর্য্য সমাজে গৃহীত হইতেন ! এমন কি বেদ-মন্ত্র পর্যন্ত শূদ্র দ্বারা রচিত হইয়াছিল । ইহাতে স্পষ্টই দেখা যাইতেছে, আর্য্যগণ শূদ্রগণের প্রতি কোনরূপ কঠোর ভাব দেখান নাই, বরং তাহাদিগের আর্য্য ভাবে শিক্ষিত করিতে প্রয়াসী হইয়াছিলেন । কিন্তু ব্ৰাহ্মণগণ পরে তাহাদিগকে আর্য্যদের সহিত একেবারে পৃথক করিয়া দিয়া, তাহদের প্রতি অমানুষিক অত্যাচার ও উৎপীড়ন করিতে আরম্ভ করিল | আমরা ঋষির নাম শুনিয়! মনে করিয়া লই যে, ঋষিগণ গায়ে ভস্ম মাখিয়া, জটা বন্ধল পরিয়া বনে বসিয়া ধ্যানে মগ্ন থাকিতেন । এই ঋষিগণ অতি উগ্র স্বভাবাপন্ন, যাহার উপর ক্রুদ্ধ হইতেন, অমনি তাহাকে শাপ দিতেন, শাপ প্রভাবে সে কখনও পুড়িয়া ভষ্ম হইয়া যাইত, কখনও বা নানা প্রকার জন্তুর আকার ধারণ করিত। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে ইহারাও সামাজিক জীব ছিলেন, আর্য্যঋষিরা বিবাহ করিতেন, তাহদের পুত্র কন্য হইত। যাহারা আর্য্যদের মধ্যে শিক্ষিত ও জ্ঞানী, তাহারা অতুল পরিশ্রমে ও