পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/২৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

సెtyé সামাজিকত জীবন সংগ্রামের উপযোগী । এইরূপ সামবায়িক নিয়মবিশিষ্ট সামাজিক জীবের কতকগুলি অক্ষম হইলেও তাহারা জয়ী হইয়া থাকে। এই সামবায়িকতা জীবের একটা শক্তির উপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করিয়া থাকে। এই শক্তি সমাজস্থ জীবসমূহের পরস্পরের নিকট স্বীয় মনোভাব জ্ঞাপন করিবার শক্তি । এই শক্তি ব্যতীত সামাজিকত্বের কোন মূল্য নাই। যে সৈন্তদলে ইঙ্গিতের দ্বারা সংবাদ জ্ঞাপন করিবার কোন ব্যবস্থা নাই, সে সৈন্যদল শক্তিহীন । সংখণই শক্তি, যদি কোন দলে ঐ শক্তির সহিত হস্তপদাদি সঞ্চালন, কোন শব্দ করণ, প্রভৃতি যে কোন উপায়েই হউক পরস্পরের মনোভাব জ্ঞাপন করিবার ব্যবস্থা থাকে এবং অন্তদলে তাহা না থাকে, তাহা হইলে পূৰ্ব্বোক্ত দলের জয় অধিকতর সম্ভব। এইজন্ত ইঙ্গিতে মনোভাব জ্ঞাপন প্রথার স্বষ্টি হইয়াছিল। প্রাকৃতিক নিৰ্ব্বাচনের অধীনে ইহার ক্রমোন্নতি অবশুম্ভাবী । কালে প্রত্যেক জীবসম্প্রদায় তাহার জীবনের পক্ষে যথেষ্ট ইঙ্গিতের স্বষ্টি করিয়া লইয়াছিল। ঐ সকল ইঙ্গিতই ভাষা এবং ঐ সকলই জীবের বাকৃশক্তির অভিব্যক্তির প্রথম স্তর। যে উপায়ে এক মন হইতে অন্ত মনে সংবাদ প্রচারিত হয়, তাহারই নাম ভাষা। পৃথিবীতে যে দিন হইতে জীব একত্র বাস করিতে আরম্ভ করিয়াছিল, সেইদিন হইতে ভাষার স্বষ্টি । জীবসকল একসঙ্গে বাস করে ও ভ্রমণ করে, ইহা হইতেই বুঝা যায় যে তাহারা পরস্পর মনোভাব জ্ঞাপন করে। ক্ষুদ্র ভারতী পৌষ, ১৩২৬ জীবের মধ্যে পিপীলিকার জীবন অত্যন্ত সামাজিক। তাহারা যে কয়েকটা অল্পসংখ্যক ইঙ্গিতের সাহায্যে তাহদের কতকগুল সাধারণ মনোভাব জ্ঞাপন করে, এমন নহে। অতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয়ও জ্ঞাপন করিবার জন্য তাহাদের যথেষ্ট শক্তি আছে। সকলেই দেখিয়াছেন যে দুইটি পিপীলিকা যখন একত্র হয়, তখন তাহার একটু দাড়ায় এবং তাঁহাদের সম্মুখের পদাদির দ্বারা পরস্পর একটু সম্ভাষণ করিয়া থাকে। এই হস্তপদাদি অ'ল্ফালনে যে কি ভাষা ব্যক্ত হয়, তাহ এখনও অনুধাবনের বিষয়। ইহা হইতে বুঝা যায় হে পৃথিবীতে অতি প্রাচীনকাল হইতেই ভাষার অস্তিত্ব আছে। অপেক্ষাকৃত উন্নত জীবগণের মনোভাবজ্ঞাপক অনেক প্রকার বাহ্যিক ইঙ্গিত আছে। অশ্বের হ্ৰেষ, হস্তীব বৃংহিত, গর্দভের রাসভ, ময়ূরের কেক প্রভৃতি রব সহজেই অন্ত জীবে বুঝিতে পারে। একটি বানর তাহার মনোভাব প্রকাশের জন্ত অন্ততঃ সাত প্রকার বিভিন্ন শব্দ উচ্চারণ করিতে পারে । পণ্ডিত ডারউইন কুকুরের স্বরে চারি কিম্বা পাঁচটি গ্ৰাম লক্ষ্য করিয়াছেন ; যথা, শিকার কালে ব্যগ্রতাস্থচক, ক্ৰোধস্থচক, নিরাশাস্বচক, আননসুচক এবং রাত্রিকালীন চীৎকার । আবার যখন কোন দ্বার অথবা জানালী খুলিবার জন্ত প্রার্থনা করিবার প্রয়োজন হয়, তখন কুকুর একপ্রকার বিচিত্র শব্দ করিয়া থাকে । এই সকল সঙ্কেত কথিত ভাষার তুল্য। পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি সংবাদ জ্ঞাপনের যে কোন উপায়ই ভাষা। কিন্তু এই ভাষাই কথা নহে ।