পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৩১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাণী বৃদ্ধ নান্নি ছোট ছোট নাতি নাতিনীগুলিকে লইয়া একটা মাদার গাছের , তলে বসিয়া হাসি ঠাট্টা করিতেছিল। বহুদিন বিদেশে কাটাইয়া সে সেই মাত্ৰ কয়দিবস দেশে ফিরিয়াছিল ;–ইচ্ছ। জীবনের শেষ দিন কয়টা এমনি আমোদে সে কাটাইয়া দিবে। সারা জীবনটা যুদ্ধ ব্যবসায়ে কাটাইয়া সে তখন বড়ই ক্লান্ত হইয়া পড়িয়াছিল— হিংসা, দ্বেষ আর তাঙ্গার মোটেই ভাল লাগিতেছিল না । যৌবনের সে উদ্যম আর নাই—বাহুতে সে অসুরের বল ক্ষীণ হইয় গিয়াছে, তাহার সমস্ত দেহ জরাজীর্ণ ; ভালপুত্র নাল্পি আজ শিশুর মতই দুৰ্ব্বল । শরতের নিৰ্ম্মল রাত্রি। উপরে পুর্ণচন্দ্র বিরাজমান। সারা পৃথিবী তাহার স্নিগ্ধ কিরণ মাখিয়া একখানি লাবণ্যময়ী রমণীপ্রতিমার মত দেখাইতেছিল। "দাদা ! তুই বাজ আমরা শুনি - হ্যা দাদা বাজ ।” ছয় বৎসর বয়স্ক পৌত্রী ভুটির হঠাৎ বাজনা শুনিবার ইচ্ছা হইল। সে পুন: পুনঃ বৃদ্ধ নারিকে ‘বাজ, বাজা’ বলিয়৷ উত্যক্ত করিতে লাগিল । বৃদ্ধ ক্ষীণ হাসি হাসিয়া ভুটিকে ক্রোড়ে লইয়া বলিল,—“কি বাজাব দিদি ?” “সেই তোর বঁাশিটা—হঁ্য দাদা বাজ ।” বৃদ্ধের সহিত সৰ্ব্বদাই একটী বংশ নিৰ্ম্মিত বাশি ফিরিত—এক দণ্ডও সে সেটকে কাছ ছাড়া করিত না । কিন্তু কেহ কখনও তাহাকে সেটি বাজাইতে দেখে নাই ! বুদ্ধ আবাব হাসিয়া বলিল,—“ছি দিদি ! ও কথা ব’ল না আমি কি বাজাতে জানি যে বঁশি বাজাব ?” বৃদ্ধের কথা শুনিয়া একটা অষ্টম বর্ষায় বালক বলিল,-“না, জানি না বই কি ! ইঃ ! তুই মিছে কথা ব’লছিল। যদি বাজাতেই ন জানবি তবে তোর সঙ্গে সঙ্গে বশিটা সৰ্ব্বদা ফেবে কেন ?” বৃদ্ধ সে কথার কোন . উত্তর না দিয়া পূর্বের মত কেবল বলিল,—“নারে দাদা-- সত্যি ব’লচি আমি বাজাতে জানিন ।” বালক বালিকাব| কিন্তু তাহার কথা বিশ্বাস করিল না। ভুটি ক্ষুব্ধ স্বরে বলিল,— “আচ্ছা দাদা এত ক’বে বলুম তুই তবু একবার বঁশিট বাজালিনে আমিও আর তোর পাকা চুল তুলে দেব না। বেশ, বেশ !” বৃদ্ধ বালকের মত সরল প্রাণে একবার হাসিয়া উঠিল তাহার পর বলিল,—“ন দিদি রাগ করিস নি। আমি ত বঁশি বাজাতে জানি ন--আচ্ছ তার চেয়ে বরং একটা গল্প বলি শোন ! কেমন ? তা হ’লে ত’ আর রাগ থাকবে না ?” বালক বালিকার সোৎসাহে তাহাকে ঘেরিয়া বসিল, বলিল –“হঁ্যl. হ্যা দাদা তাই বল, সেই বেশ হবে । কিন্তু যুদ্ধর কথা— ভূতের গল্প হ’লে হবে না।” বৃদ্ধ বলিল,—“আচ্ছ। তাই ব’লচি শোন!” বৃদ্ধ যে গল্পটি বলিল তাহা এই – সে আজ প্রায় ষোল সতের বৎসর পুৰ্ব্বের