পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৩৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭শ বর্ষ, দশম সংখ্যা আরাধ্য দেবতােব আত্মজ ! বিশ্বনাথ ! এব চেয়ে অঘটন ঘটনা অব কি কিছু ছিল না ! সন্ধ্যাব মৃদু অন্ধকাবে কল্যাণী আসিয়া তাছার গলা ধবিয়া গাঢ়স্বরে ডাকিল “বউ !” একি সম্বোধন ! সে কোন গৃহের বধু ? উত্তব না পাইয়া ননন্দ অধিকতর মেহে তাহাকে বক্ষে টানিয়া লইল “বুঝেছি বউ তুই কেন অমন আজ বুঝেছি, তোব জন্ত আমারও প্রাণ কাদচে ভাই”। এবার আর সহিল না সেই সঙ্গানুভূতিপূর্ণ বক্ষে পড়িয়া সে প্রাণ ফাট কান্না কাদিল । গভীর রজনীর অন্ধকাবে উষ্ণ প্রস্রবণের বস্তধারায় জড়ত্ব কাটাইয় লুপ্তচেতন লুপ্ত স্মৃতিকে লইয়া জীবনব্যাপী হাহাকার মাত্র সম্বলে আবার জীবন জাগিয়া উঠিল । দিনের আলো না জাগিতে বিজয়াব আয়োজন হইয়াছিল, নহবতের সানাই সারাদিনই বন্ধ আছে, গাছের পার্থী তখনও ডাকে নাই, কল্যাণী ডাকিল “বউ” ! কি জানি সহানুভূতিপূর্ণ নারী চিত্তে কি আছে তাহা পাষাণকেও প্রাণ দিতে পারে, পাষাণী কহিল “আর কিছু বলে, আমি কমলা—” “না তুমি আমার বড় আদবের বউ । ভাই অনেক তো বুঝলাম ; হিন্দুব মেয়েব স্বামাই সব স্বামীদ্বেষিণী হয়ে না ; অতীত ভুলে যাও, ঈশ্বর সাক্ষ্যে র্যাকে বরণ করেছ তাকে কায়মনে গ্রহণ কর ।” ঠিক কথাই বলিয়াছ কল্যাণি ! ঈশ্বর সাক্ষ্যে র্যাহাকে স্বামী বলিয়া মনে স্থান দিয়াছি র্তাহাকে কে দূরে সরাইতে পারিবে ! হিন্দু মেয়ের দুবার বিবাহ হয় কি ? বিদায়ের অশুভ মুহূৰ্ত্ত দেখা দিল । কমল৷ ३ বাগদত্ত ولا من ما لا যখন শুনিল সে এখানেও স্থান পাইবে না, যাহাব সঙ্গ তাহাব পক্ষে হিংস্ৰ শ্বাপদাপেক্ষ ভয়াবহ এ বিশ্বে একমাত্র তাহারই বাহু তাহার অবলম্বন । তখন তাহার বজ্রাহত প্রাণ ও আতঙ্কে শিহবিয়া উঠিল । কল্যাণী অজস্র অশ্রুজলে ভাসিতে ভাসিতে ঘুমন্ত পুবীব মধ্য দিয়া হাতে ধবিয়া তাহাকে যখন গাড়িতে তুলিয়া দিতে লইয়া চলিল, সে তখন আব আপনাকে সম্ববণ করিতে পারিল না, সব ভুলিয়া তাহাব হাত দুইখানা চাপিয়া ধবিল—“তোমাব মনে দয়া মায়া আছে আমায় এমন করে তোমবা তাড়িয়ে দি ও না, তোমাব মাকে ডাকে, তবে পায়ে ধরে একটু আশ্রয় ভিক্ষা করবো দেবেন না কি ? কল্যাণী ফুলিয়া ফুলিয়া কাদিয়া ছুটিয়া চলিয়৷ গেল। ক্ষণপবে স্তব্ধগম্ভীব মুখে গিরিজ সুন্দরী আসিলেন । কমল৷ ত{হব পা ধরিয়া বলিল "আমায় তোমার এই বাড়ীর একটা কোণে পড়ে থাকতে দাও মা, তোমার পায়ে ধরচি আমায় বিদায় কবোন, আমার এ জগতে আর স্থান নেই।” গিবি জার স্ফীতনাসা, আরক্ত নেত্র, সজল জলদ তুল্য মুখ তাহাকে যেন দুভেষ্ঠ করিয়া তুলিয়াছিল । কোন মতে পা সরাইয়া লইয়া পরুষ কণ্ঠে কহিলেন “কেন বাছ! মায়ু বাড়াও ! তোমার স্থানেৰ অভাব কি ! মুখের হাতে ত পড়নি আমারই যাহোক সৰ্ব্বনাশটা করলে । বাছাকে আমার—” বলিতে বলিতে অশ্রুজলের কম্পনে গলা ধরিয়া ক্ষোভে ক্রোধে "হতাশায় অধীর হইয়া কাদিয়া ফেলিলেন “এমন করে তোকে বিদায় দিতে হলো বাবা আমার !”