পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৩৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭শ বর্ষ, দশম সংখ্যা রাস্ত ঘাটে ষ্টেশনে, এখানে ওখানে সাধারণ লোকের ভিতর ভাত রান্না দেখিয়া আসিয়াছেন, ভদ্র পরিবারের ভিতর দেখিবার সুযোগ পান নাই ।” যাহা হউক এই উত্তরে সেদিন সহাধ্যায়ীর হাত হইতে কোনরকমে নিস্তার পাই। বাস্তবিক আমাদের ভারতের প্রায় সৰ্ব্বত্রই লঘুপাক এবং পুষ্টিকর খাদ্য ভাতের ফেনটা ফেলিয়া দেওয়া হয়। ভাতের পরই মূলা । মূল ২৪ টুকরা না খাইলে উহাদের খাওয়া অসম্পূর্ণ রহিয়া যায় বলিয়া মনে করে। পায় বার মাসই মুল পাওয়া যায় । চালের কুড়া এবং লবণের সাহায্যে প্রকাণ্ড কাঠের পিপাতে মুলা পচাইয় রাখা হয়। সে মুলার গন্ধে ভারতবাসীকে নাকে কাপড় দিতে হয়। গরীব লোকের প্রধান আহাৰ্য ভাত, সবুজ চার জল এবং কয়েক টুকরা মুলা । এর উপর যদি কখন ঘটিয়া উঠে উহার মাঝে মাঝে ডালের কোন জিনিস কিম্বা মাছ খাইয়৷ থাকে। জাপানে ডালে অনেক রকম জিনিষ প্রস্তুত হইয়া থাকে । পিষ্টক, মিঠাই এবং উহার শ্বেতসারে অতি উপাদেয় এবং পুষ্টিকৰ তোকু নামক খাদ্য প্রস্তুত হয়। জাপানে অনেক রকম মাছ পাওয়া যায়। সে দেশে ছোট ছোট নদীর সংখ্যা বিস্তর। আমরা সামুদ্রিক মাছ আদৌ পছন্দ করিতাম না। জাপানীরা এক প্রকার সামুদ্রিক মাছ কাচাই খায়। এই মাছ পাতলা পাতলা টুকরার আকারে কাটিয়া কেকের মতন সাজাইয়া রাখা হয় । ইহাকে ছাপিমি বলে । কোন কোন ভোজে ইউরোপ এবং আমেরিকাবাসীকে পরম পরিতৃপ্তির সহিত ছাসিমি খাইতে দেখিয়াছি। দাইতোকোরে ১৩৬৭ এ মাছ অতি নরম এবং জাপানের একটি উপাদেয় খাদ্য। আমরা অনেকেই উহা স্পর্শ করিতেও সাহসী হই নাই। এক প্রকার স্ববৃহৎ সামুদ্রিক মাছ আছে তাঁহার নাম মাগুড় জাপানের কই মৎস্ত অতি সুস্বাদু। কই এর দ্যায় অন্তান্ত নদীর মাছ আমরা সকলেই বেশ পছন্দ করিতাম। আমাদের জাপান জীবনের લક્ષમ অবস্থায় আমরা একদিন চাকরাণীকে কি কি মাছ পাওয়া যায় জিজ্ঞাসা করায় কই, মাগুড়, তাই প্রভৃতি অনেক মাছের সে নাম করিল। আমরা তখন এগার জন ভারতবাসী এক সঙ্গে থাকি ঠাম। আমাদের একজন বন্ধু, চাকরাণীকে, প্রত্যেকের ২টি হিসাবে ২২টি কই মাছ আনিতে আদেশ দিলেন। চাকরাণী কই মাছ ওয়ালাকে ডাকিয়া আনিলে সকলেই উৎসুক হইয়া কই মাছ দেখিতে নীচে নামিয়া আসিলাম। মাছ দেখিয়া সকলেই অবাক । রুই মাছের মতন বড় ২২টি মাছ আলিয়া হাজির ৷ জাপানী কই আস্বাদনেও রুই মাছের মতনই। যাহা হউক ২টি মাত্র রাখিয়া অবশিষ্ট ২০টি ফেরৎ দেওয়া গেল । শুষ্ক মাছ জাপানীদের আর একটি উপাদেয় খাদ্য । উত্তর প্রদেশ হইতে তোকিও প্রভৃতি অঞ্চলে প্রচুর শুষ্ক মাছ আমদানী হইয়া থাকে। শব্জী রণধিবার বেলায় প্রায়ই উহার শুষ্ক মাছ চাচিয়া চাচিয়া উহার কণা তরকারীতে মিশাইয়া দেয় । আলু, কপি, বেগুন, রাঙালু প্রভৃতি সকল রকম শব্জীই বিস্তর জন্মিয় থাকে। সেইজন্য মাছ এবং সঙ্গী জাপানে বেশ সস্তা। মসলা উহাদের সম্পূর্ণ ভিন্ন রকমের।