পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৩৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SS e 8 আমি কহিলাম “যদি অনুগ্রহ করে অনুমতি করেন তাহলে আমরা কিছু মাছ মাংস প্রভূতি খাদ্যদ্রব্য আপনাদের জন্তে উপহার পাঠিয়ে দিই।” সন্ন্যাসী হাসিলেন, কহিলেন, “আমরা ত কৃচান নই—আমবা উচ্চশ্রেণীর বৌদ্ধ,—আমাদের শাস্ত্র অহিংসা ব্ৰত গ্রহণ করতে উপদেশ দেন, নিজের দেহ রক্ষার জন্ত মানুষের জীবহত্যা করব।র যে কোন অধিকার অাছে তা আমরা মনে করি নে, মানুষ যে জিনিষ, যে দুল্লভ জীবন ধন, দান করতে পারেন। বিশিষ্ট কারণ ব্যতীত সে জীবন গ্রহণ করবার ভগবদত্ত তার কোন অধিকারই নেই । মাপ করবেন আপনার দেওয়া উপহার আমরা গ্রহণ করতে সম্পূর্ণরূপেই অক্ষম।” এ কথার এইখানেই শেষ করিয়া দিয়া কাপ্তেনের দিকে ফিরিয়া সম্মিত মুখে কহিলেন “কাপ্তেন মোডোজ বিদায়,— জাহাজে আপনি আমাদের সঙ্গে যে রকম অসাধারণ সদব্যবহার করেছেন তার জন্ত আমাদের আন্তরিক ধন্যবাদ গ্রহণ করুন, ভগবান আপনাকে আনন্দ দিন,—আর সহকারী মহাশয় আপনাকেও বিদায় জানাচ্চি —এক বৎসরের মধ্যে আপনি আপনার মিজের জাহাজ নিয়ে বেরুতে পারবেন।– মিষ্টার ওয়েষ্ট, এদেশ ত্যাগ করে যাবার পূৰ্ব্বে—আমার বিশ্বাস আবার আপনার সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হবে—নমস্কার।” মস্তক ঈষৎ নমিত করিয়া আমাদের অভিবাদন জানাইয়া ধীর গাম্ভীৰ্য্যময় পদ বিক্ষেপে তিনি যেদিক হইতে আয়িয়াছিলেন সেই দিকেই চলিয়া গেলেন। - ভারতী মাঘ, ১৩২০ বাড়ীর পথে ফিরিবার সময় কাপ্তেন মোডোজ স্মিতমুখে কহিলেন “হকিংস্ এক বছরের মধ্যেই তুমি ত জাহাজের মালিক হচ্চ ? আমি তোমায় অভিনন্দন কচ্চি ?” সন্তোষের হাসি হাসিয়া সহকারী উত্তর দিলেন, “সে সব বি—আর এসব কপালে হবে ? কিন্তু বলাও যায় না কিছু। কি থেকে কি হয়—বিশেষ ওসব লোকের কথা ?”— কথার সঙ্গে সঙ্গে একটু বিশেষ বাহাদুরিব্যঞ্জক অভিজ্ঞতার দৃষ্টিতে যুগপৎ কাপ্তেন ও আমার প্রতি কটাক্ষপাত করিয়া পুনরায় কহিলেন, “মিঃ ওয়েষ্ট লোকটিকে দেখলেন ত, কি মনে হয় ?” সন্ন্যাসীর অপরিবর্তিত প্রশান্ত কোমল কণ্ঠস্বর তখনও আমার কর্ণে সুমধুর বাদ্যযন্ত্রের মত বাজিতেছিল, অপরূপ সৌন্দৰ্য্যময় মূৰ্ত্তি তখনও আমার মানসনেত্রে উদভাসিত হইয় উঠিতেছিল, বুকের ভিতরটা যেন দুলিতেছিল—তাহা আশ্চর্য্যে কি আনন্দে নিশ্চয় করিয়া বলা যায় না । তখন অম্লান রৌদ্রে সমস্ত আকাশ ভরিয়া গিয়াছে, সমুদ্রের গর্জনধ্বনি যেন আমার হৃদয়ের শাস্তভাবের সহিত সুর মিলাইয়া বাজিতেছিল, স্নিগ্ধ বাতাসে জড় ও চেতনের মৰ্ম্মে মৰ্ম্মে একটা আনন্দের উজ্জল রেখা ফুটাইয়া তুলিয়াছে। স্বপ্নপূর্ণ দৃশু হইতে চক্ষু ফিরাইয়া সচকিত হইয়া সহকারীর প্রশ্নে উত্তর দিলাম “চমৎকার! সত্য সত্যই লোকটিকে দেখে আমি চমৎকৃত হয়েচি । কি সুন্দর মাথার গড়ন, কি মহিমাব্যঞ্জক ধরণধারণ, সাধারণ যুবপুরুষদের মধ্যে এমন উন্নত গাম্ভীৰ্য্যপূর্ণ ভাব আমি আর কখনও দেখিনি। আচ্ছ এর বয়স কত