পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭শ বর্ষ, সপ্তম সংখ্যা কিন্তু সঙ্কোচ নাই বলিলেও তো সঙ্কোচ যায় না, দোষ নয় ভাবিতে চেষ্টা করিয়াও যে অপরাধেব ভারে সারা প্রাণ ভারী হইয়া উঠিতেছে। মাথার ভিতবে আগুন জলিতে লাগিল, পাপ নয়, দোষ নয় তবে কেন এ আগুন ! তবে কেন এ হত্যাকারীর আতঙ্ক ! চোরের মত যন্ত্রণপূর্ণ সঙ্কোচ । ইহা কি কি তবে ? ধীবেধীরে সে উঠিয় বলিল, চারিদিকে চাহিয়া ললাটেব কেশগুচ্ছ অপস্থত করিল। কোয়াসার আক্রমণে নক্ষত্র দুইটি ঢাক পড়িয়ছে তথাপি সেই দিকে চক্ষু যাইতেই আবাব তাহার আপাদ মস্তক শিহরিয়া উঠিল। সেই অদৃশু তারকাদ্বয় যেন সেইখানে অগ্নিময় অক্ষরে তাহার পিতার হস্ত লিপির অনুকরণে লিখিয়া রাখিয়ছিল “বিশ্বাস ঘাতকতা ! বন্ধুদ্রোহ ।” জলন্ত গোলা যেন তাহার হৃদপিণ্ডট অকস্মাৎ বিদ্ধ করিয়া তাহার মুখ হইতে আচমকা অস্ফুট কাতরোক্তি বাহির করিয়া লইল ! “ওঃ না, না, না ।” সে সেই মূহূর্তে যেন তাঙ্গর সম্মুখে অতি নিকটে তাহার মূৰ্ত্তি প্রত্যক্ষ করিল, সেই প্রসন্ন মুখ অথচ তেমনই হৃদয়ভেদী দৃষ্টি, তিনি যেন তাহার দিকে চাহিয়া মৃদু হাসিলেন, শুধু একটু খানি হাসি - কিন্তু ইহাতেই তাহার সৰ্ব্ব শরীর শিহরিয়া উঠিল। যেন স্পষ্ট কানের কাছে র্তাহারই কণ্ঠস্বরে ধ্বনিত হইল, “ইহা বিশ্বাসঘাতকতা, মিত্রদ্রোহ ইহাই ।” হায় হায়, তবে তাহাকে কি এখনই চাকদায় যাইতে হইবে ? মনীশের খুল্লতাতের নিকট করালীচরণের অসদুদেখ জ্ঞাপন করিয়া বাগদত্ত। ৭৬৫ বন্ধুর ঋণ শোধ করিতে হইবে । লোকে তাহাকে বন্ধুবৎসল বলিবে কিন্তু তাহার নিজের ইহাতে কি লাভ কি উপকার ! দুই বৎসরাধিক সে যাহার অনুসন্ধানে সৰ্ব্বস্ব পণ করিয়াছে, যাহার জন্ত ংসারের কোন লাভেব দিকে চাহিয়া দেখে নাই, বরং করায়ত্ত লক্ষ্মীকে ঠেলিয়া ফেলিয়া এই দারিদ্র গ্রহণেও দ্বিধা করে নাই সেই চির ঈম্পিতকে সে কিসের মূল্যে ত্যাগ কবে । বন্ধুত্ব। কৰ্ত্তব্য। সংসারে ইহাদের স্থানও অল্প নয়। নিজেব হৃদয়ের মধ্যে যত আৰ্ত্তনাদ উঠক, তাহ চাপা দিয়া জগতের চক্ষে যশলাভ করিয়াই তৃপ্ত হইতে হইবে । ৰেশ তাহাই করিব, প্রথম গাড়িতেই আমি চাকদ। যাইব । এতক্ষণে যেন মস্তিকের পীড়ন বক্ষের অস্থিরতা কতকটা সাম্যভাব প্রাপ্ত হইয়া মাসিল। ফুটন্ত শোণিততরঙ্গ উল্লাম নৃত্য ভঙ্গ করিয়া শান্তগতি ধরিয়া নিজপথে বহিতে আরম্ভ কবিল। এত শীতেও আভ্যন্তরিকতাপে ললাট তলে দুএক বিন্দু ঘৰ্ম্ম্য জমিয়া উঠিয়াছিল, তাহা মুছিয়া ফেলিয়া সে দুই হাতে মাথাটা টিপিয়া ধবিল, ললাটেব স্ক্রীত শিরা অল্পে অল্পে স্থির হইয়| আসিতে লাগিল, এমন সময় চারিদিকের নিস্তব্ধতা ভঙ্গ করিয়া ঢং ঢং ঢং কবিয়া তিনটা বাজিয়া গেল । কিন্তু হঠাৎ শচীকান্ত যেন একটা বিস্মৃত স্মৃতির উদ্রেকে আশান্বিত হইয়া উঠিল। কিন্তু আমি কি একই তার বন্ধু ! সে তো কই বন্ধু বলিয়া আমার কথা মনে কবা আবশ্যক বোধ করে নাই ? এত বড় সন্দেহজনক অবস্থায় নাকি কেহ সত্য পরিচয়ে অনভিজ্ঞ থাকিতে পারে ? মনীশ নিশ্চয় বুঝিয়াছিল এ কমল৷ তাছারই