পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৩৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১১১৬ তুলিীলইলেন ; রাত্রিকালে রোগী দেখিতে যাইতে হইলে তিনি "এই ওক কাঠের সুন্দর ছড়িট না লইয়া যাইতেন না। র্তাহার দৃঢ়মুষ্টিগত ছড়িটার দিকে চাহিয়া একবার ঈষৎ হাস্ত করিলেন তাহার পর সেট ঘুরাইতে লাগিলেন। অকস্মাৎ দন্তে দন্ত 1ঘর্ষণ করিয়া সঞ্জৈাবে ছড়ি দিয়া একখানি চেয়ারে আঘাত করিলেন ; সঙ্গে সঙ্গে সেটা ভগ্নাবস্থায়" মেঝের উপর পড়িয়া গেল । দ্বার খুলিয়া তিনি বাহির হইয়া গেলেন, কিন্তু চন্দ্রকিরণ উদ্ভাসিত আকাশের পানে চাহিয়া স্তম্ভিত হইয়া দাড়াইলেন। এরূপ সুন্দর চন্দ্রালোক তিনি বহুদিন দেখেন নাই । র্তাহার প্রাণ,—সেই শান্ত রজনীর বিরাট সৌম্য চন্দ্রালোক দেথিয়া প্রাচীন ঋষি ও কবিদিগের দ্যায় ভাববিভোর, চিন্তামগ্ন হইয়া পড়িল । তাহার ক্ষুদ্র বাগানখানির সারবন্ধী ফলের গাছগুলি স্নিগ্ধ চন্দ্রালোকে স্নাত হইয় তাহাদিগের সরু দীর্ঘশাখা বাহুগুলির ছায়া পথের উপর ফেলিয়া দাড়াইয়া ছিল। তখন আর সে গুলি তেমন সবুজ দেখাইতে ছিল না । অন্যদিকে গৃহপ্রাচীর গাত্র বাহিয়া যে পুষ্পলত তাহার ঘরের ছাদের উপর উঠিয়াছিল তাহার স্নিগ্ধ মিষ্টগন্ধ বায়ু পথে ীেগন্ধের একটী বিমল আত্মার স্তায় ভাসিয়া আসিতেছিল ৷ ” * - মাতাল যেমন" আগ্রহে মন্ত 'পাম করে তিনি ঠিক তেমনি আগ্রহে বায়ু পথে ফুলের আপ্রাণ ইতেছিলেন। " সেই ভাবে তিনি অগ্রসর হইতে লাগিলেন ; বিক্ষিত, বিমুগ্ধ }

ভারতী মাঘ, ১৩২৬ তিনি আপন ভাগিনেসীর কথা একেবারেই ভুলিয়া গেলেন। মাঠের পথে আসিয়া পড়িতেই তিনি সেই চন্দ্রালোক পরিস্নাত নিশীথের নিস্তব্ধ শুভ্র প্রান্তরের সৌন্দর্য উপভোগ করিবার জন্ত স্থির হইয়া দাড়াইলেন । কি সুন্দর সে দৃশু! স্নিগ্ধশাস্ত রজনীতে ঝিল্লিরব ও চক্ৰবাক বধুর গীতের মূর্ছনা বায়ুপথে ভাসিয়া আসিতেছিল। পুবোহিত আবার অগ্রসর হইতে লাগিলেন, কিন্তু এবার তাহার হৃদয় যেন অশান্ত হইয়া উঠিতেছিল , হঠাৎ এরূপ হইবার কোন কারণ তিনি ভাবিয়া পাইলেন 'মা । ক্রমেই তিনি যেন অধিকতর শ্রান্ত ক্লাস্ত হইয়া পড়িতে লাগিলেন । তাহার ইচ্ছা হইতেছিল যেন সেইখানেই থাকিয় যান, একটু বিশ্রাম করেন, ভগবানের এই সৌন্দৰ্য্য স্বষ্টির মধ্যে বসিয়াই তাহার পূজা ও মহিমা কীৰ্ত্তন করেন—এইং এইখানেই—এই অনন্ত সৌন্দর্ঘ্যের মধ্যে র্তাহার জীবন"অবসর লাভ করে ! s' অল্প দূরে নদীর বক্র পাড়ে পপলার বৃক্ষের সারি মাথা উচু করিয়া দাড়াইয়াছিল ; একটা পাতলা কুয়াস, অস্বচ্ছ শুভ্র বাষ্পজাল চন্দ্রালোকে ঈষৎ দীপ্তিশালী হইয়া ক্ষুদ্র নদীটির ধারে ঝুঁকিয় পড়িয়াছিল ; তাহাতে বঙ্কিমগতি নদীটির জলস্রোত ঈষৎ দীপ্তিময় স্বচ্ছ পশমী বস্ত্রখণ্ডে ' আবৃত বলিয়া শোধ হুইতেছিল। ,,·F莎” পুরোহিত আবার থামিলেন। তাহার অন্তরের অন্তঃস্থলে পৰ্য্যন্ত একটা অদম্য, ক্রমণ ধৰ্দ্ধনশীল স্নিগ্ধ চঞ্চলতার প্রবাহ চুটিয়া গেল ।