পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৪৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭শ বর্ষ, একাদশ সংখ্যা রোহিলানবাব রাজকীয় প্রাসাদে নীত, এবং জেনানার বালক ভূত্য নিযুক্ত হইলেন। তাহাকে উক্ত কার্য্যের উপযুক্ত হইতে অত্যন্ত যাতনা ভোগ করিতে হইয়াছিল। এই যাতনাই নাকি শেষ কালে তাহাকে ভীষণ প্রতিশোধ লইতে বাধ্য করিয়াছিল । অপর মতে, র্তাহার ধীশক্তি চিরকালই অসংযত ছিল, এবং ইহা স প্রমাণ করিবার জন্ত কতকগুলি আশ্চৰ্য্য ঘটনাও লিপিবদ্ধ হইয়াছে । শেষ অবস্থায় একদিন তিনি সম্রাট পরিবারবর্গকে র্তাহার সম্মুখে নৃত্য করিতে বাধ্য করিলেন। তাহাব নাচিতে লাগিলেন। কিছু পরে তিনি নিদ্র যাইবার ভাণ করিয়া সিংহাসনে হেলিয়। পড়িলেন । আবার তৎক্ষণাৎ উঠিয়া নৰ্ত্তনশীল রাজপরিবার বর্গকে এরূপ সুবিধা দেখিয়াও র্তাহীর জীবনের উপর লক্ষ্য না করায় কাপুরুষ বলিয়া ভৎসনা করিতে লাগিলেন। অপর এক সময়ে, তিনি দেব তার প্রত্যাদেশের উপব সমস্ত দোষ আরোপ করিয়া আপনার পাপের বোঝা লাঘব করিতে চেষ্টা করিয়াছিলেন। গ্রীষ্মকালে আগ্রী হইতে আসিবার সময় যখন প্রখর স্বৰ্য্যতাপ অসহনীয় হইয়া পড়িল, তিনি পথিপাশ্ববৰ্ত্তী কোন উপবনে বিশ্রামার্থ শয়ন করিলেন। এই সময়ে তিনি স্বপ্ন দেখিলেন, যেন একটা স্বর্গদূত তাহার অন্তৰ্ব্বিদ্ধ করিয়া কহিতেছেন, “উঠ, দিল্লিতে যাও এবং প্রাসাদটী আপনার জন্ত অধিকার করিয়া লও।” যাহা হউক, শাহ বোহিলানবাবকে নিৰ্দ্দয় শঠতার প্রতিমূৰ্ত্তি মনে করিয়া অন্তরের সহিত ঘৃণা করিতেন। তিনি সময় সময় একটী কবিতার আবৃত্তি গোলাম কাদির ও ইসলাম বেগ S} is করিয়া তাহার কারাদুঃখ কথঞ্চিৎ লাঘব করিতেন।– যে স্তষ্ঠে সাপের দেহ করে পুষ্টি লাভ, তাবেই আঘাত করা সাপের স্বভাব। বোহিলা নবাবের তুলনায় তাহার সহকারী ইসলাম বেগের পরিণাম অপেক্ষাকৃত কম শোচনীয় এবং কম ভয়ঙ্কর হইয়াছিল। তিনি সিন্ধিয়ার সেনাধ্যক্ষ রাণ খার সন্ধি প্রস্তাবে সন্মত হইয়া দিল্লি হইতে প্রত্যাবর্তন করিয়াছিলেন। কিন্তু এ সন্ধি অধিক দিন স্থায়ী হয় নাই। কারণ বেগেব ন্তায় স্বাধীনচেতা একজন বীরের পক্ষে মারাঠা সেনাবিভাগে আজ্ঞাবহ হইয়া থাকা একরূপ অসম্ভব। তাহাব খুল্লতাতের মৃত্যু পৰ্য্যস্ত তিনি মারাঠা সেনাদলে কার্য্য করিয়াছিলেন। তাহার পর আর কেহ কখন তাহাকে এই কার্য্যে ব্ৰতী হইতে দেখে নাই। ইহার পব দশ মাস কাল তিনি মধ্য যুগের সাহসী সেনাচালকদিগের দ্যায় জীবনের আর একটী বীরত্বপূর্ণ অধ্যায় অতিবাহিত করেন। এই কাৰ্য্য সম্পাদন করিবার উদ্দেশ্যে বিচ্ছিন্ন মোগল অশ্বাবোহী সেনাগণকে তিনি আপনার পতাকা তলে শ্রেণীবদ্ধ করিয়াছিলেন। এই সৈন্ত বলে বলীয়ান হইয়া বেগ, আবার একটি নুতন বিদ্রোহের স্বষ্টি করিলেন, এবং শক্তিমান মারাঠাশক্তি র্তাহার নিকট হইতে রাজকরের দাবী করিলে তিনি তাহাতে সম্পূর্ণ উপেক্ষা প্রদর্শন করিতে কুষ্ঠিত হইলেন না। দেশ কাল এবং পাত্র বিবেচনা না করিয়াই তাহার বিদ্রোহের পতাকা কিছু দিনের জন্য আবার অনেক যুদ্ধক্ষেত্রে পুলক স্পন্দনে কম্পিত হইয়া উঠিল। দামাম