পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৪৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

४२२२ করিত ! একখানি ছোট বাগান, গৃহস্বামীর সৌধীনত্বের পরিচায়করূপে কোন সময় তাহার সবুজ শোভায় সাদা রাঙ্গা পত্রপুষ্পে অথবা দরিদ্রগৃহের অভাবমোচক শাকৃপবজীতে পূর্ণ করিয়া স্নেহবাহু৭েষ্টনে তাহাকে ঘেরিয়া রাখিয়াছিল। এখন সে বাগান--- কতকগুলি শুষ্ক এবং সতেজ কণ্টকগুন্মে আচ্ছন্ন। আমার সঙ্গী সেই কণ্টক বনের মধ্য দিয়া লঘুচরণ ক্ষেপে ধীরে ধীরে দরজার নিকট উপস্তিত হইলেন। ভিতরের দিকে চাহিয়া হস্তের ইঙ্গিতে আমাকে নিকটে আহবান করিলেন, তিনি অত্যন্ত নম্র অথচ সন্ত্রমপুর্ণ স্বরে কহিলেন। “মিঃ ওয়েষ্ট তুমি এমন একটি সুযোগ পেয়েচ—যা অল্প ইউরোপ বাসীর ভাগ্যে ঘটে থাকে । ভিতরে চেয়ে দেখ—জুটি যোগী—যারা সাধনার চরম অবস্থার অভ্যস্ত নিকটবৰ্ত্তী। এরা এখন অস্তরচিন্তায় সমাধিগ্রস্ত। নতুবা তোমায় এখানে আনতে আমি সাহসই করতেম না। তিববতের “রডকের” পবিত্র মঠে এখন এদের মুক্ত আত্মা বিচরণ করে বেড়াচ্ছে । এই দেহ এখন আত্মাশূন্ত । ধীরে ধীরে পা ফেল, দেখ’ যেন মানবের সান্নিধ্যে সাধনার ব্যাঘাত হয়ে যোগীর যোগ ভঙ্গ হয়ে না যায় ; তাদের আত্মা যেন অতৃপ্ত হয়ে ফিরে না আসে। আমি বুদ্ধাঙ্গুষ্ঠের উপর দেহের ভর রাখিয়া কণ্টক গুন্মের হাত বাচাইয়া দরজার উপর উকি মারিয়া দেখিলাম । বহুকাল মানববর্জিত ক্ষীণালোক গৃছে কোন গৃহ সজ্জাই বিদ্যমান ছিলনা। এক কোণে কতকগুলি শুষ্ক খড় শয্যারূপে পড়িয়া রহিয়াছে। অসমতল डाब्रडैौ ফাল্গুন, ১৩২০ স্যাৎসেতে মেঙ্গে ঢাকিবার জন্ত কোন আচ্ছাদন নাই । মৃত্তিক-আসলে যোগী দুই জন বসিয়া আছেন, তাহদের বসিবার ভঙ্গিও অদ্ভুত। দুই পদ পরম্পরের সহিত সংযুক্ত – ক্রোড়দেশে সংস্থাপিত। এবং তদুপরি যুগলহস্ত বদ্ধালিঙ্গনে দ্যস্ত। মস্তক ও মুখমণ্ডল নত হইয়া বক্ষদেশে ঝুলিয়া পড়িয়াছে । দুই জনের আকৃতিরও িভিন্নতা ছিল । একজন ক্ষুদ্রাকার শুষ্কদেহ ; অপরজন দীর্ঘাকৃতি, তাহার অস্থিগুলি মোট ; এককালে বোধ হয় খুব লম্বা চোড়া চেহারা ছিল ইহার । এখন তাহাদের দেহ কান্তিহীন, সুক্ষ্ম চৰ্ম্মখণ্ডে মাত্র অস্থি গুলি আচ্ছাদিত,—বর্ণের উজ্জল গেীরাভা এ অবস্থাতেও লুপ্ত হয় নাই । তাহারা এমনি স্থির ভাবে বসিয়াছিলেন যে দুইটি প্রস্তর গঠিত মূৰ্ত্তির মতই দেখাইতেছিল। কেবল নিয়মিত ধীর শ্বাস প্রশ্বাসই র্তাহাদের দেহে জীবনের চিকু প্রমাণ করিতেছিল। মুখের বর্ণ অত্যধিক পাণ্ডুর, মত মস্তকের তলদেশ হইতে যে নেত্র দুইটি দেখা যাইতেছিল তাং, উন্মীলিত থাকিলেও উৰ্দ্ধোৎক্ষিপ্ত চক্ষুতারকা দৃষ্টিগোচর হইতেছিল না । একটি কানাভাঙ্গা মৃৎ কলসীতে খানিকট পানীয় জল এবং একখানা বৃক্ষপত্রে আধখানা রুটি,—তাহারই সন্মুখে একটুকুর। কাগজ পড়িয়াছিল । কাগজে বিজাতীয় ভাষায় কোন কথা লিখিত ছিল । শনৎসুন দূর হইতে সেইদিকে চাহিয়া দেখিয়া আমার পানে ফিরিয়া কছিলেন “তুমি রোধ হয় আজ একটা নূতন জিনিষ দেখিলে—? দেহ হইতে আত্মার ৰিচ্যুতি খুব- সম্ভব