পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৫৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> Ryly “খুড়িমা বড় কাতর, তার কাছে যাবে না ?” এবার অশ্রদ্ধারপরিপ্লত বেদন কাতর মুখ তুলিয়, কাতর দৃষ্টিতে কি ক্ষীণস্বরে সে কহিল “সেখানে আমার স্থান নাই ।” “কেন কমলা ?” মানুষের কণ্ঠে এমন যন্ত্রণাপূর্ণ স্বর আর কখনও শোনে নষ্ট, কিন্তু তাহার মন তখন প্রতিঘাতে নিষ্ঠুর কঠিন হইয়া উঠিয়াছিল, সে মুমুযুর শেষ নিশ্বাসেব দ্যায় প্রাণপণ বলে কহিয়া ফেলিল “সেখানে আপনি থাকিবেন ৷” মনীশকে কে যেন অগ্নিতপ্ত শেলে বিঁধিল, এত বড় অপমানের কথা তাহাব পৃষ্ঠে কেহ মারিতে পাবে এ ধারণ তাহার কথন ছিল না, সে মুহূৰ্ত্তকাল আৰ্ত্ত চোখে তাহার দিকে চাহিয়া রহিল, তারপর নিশ্বাস লইবার শক্তি ফিরিয়া আসিলে ক্ষীণস্বরে কহিল "তবে অামি থাকিব না। তুমি গুরুদেবের কাছে যাইও, তুলসী ঘাটের সেই বাড়ীতে সেইথানেই খুড়িমা আছেন। আমি এখনি গিয়া বিদায় লইব, তুমি সেখানে পৌছবার পূৰ্ব্বেই আমি কাশী ছাড়িয়া চলিয়। যাইব ।” মনীশ একটু নড়িয়া দাড়াইল, তাহার মুখ মৃতের চেয়েও বোধ হয় অধিক বিবর্ণ। সে যে আজ কতখানি দিল কমলা হয় ত তাহা বুঝিতেও পারিল না। জগতের একমাত্র মুখ খুড়িমার কোল, শোকজর্জরিত করুণাময়ীর সেবাভার, গুরুর সঙ্গ সে এক নিমেষে জীবন হইতে নিঙড়াইয়। ফেলিয়া তাহাকে দান করিল, নিজের জম্ভ রাখিল মুখহীন আশাহীন নিঃস্বত্ব শুষ্ক অংশটুকু - “তবে যাই কমলা, এ জগতে আর বোধ হয় দেখা হইবে না।” “শুধু এ জগতেই না অনস্ত জগতের ভারতী চৈত্র, ১৩২৩ কোথাও যেন আর দেখা না হয় এই একমাত্র আশীৰ্ব্বাদ করুন!” মনীশ তড়িৎ-পৃষ্টের মত সৰ্ব্বাঙ্গে—দেহে মনে শিহরিয়া উঠিল, তাহার মুখ ক্রমেই অধিকতর অন্ধকার হইয়। আসিতেছিল। এই মুহূর্তে তাহা যেন বিষজর্জরিত মুপের মৃত্যুনীলিমার স্তায় কালে দেখাইল, “কোথাও না দেখা হয় ? যাই কমলা, ক্ষমা করে—িমুহূর্তের এ পাপ ক্ষম করে আমার—” স্থলিত জড়িত মত্তচরণে মনীশ মুহূর্তে অদৃশ্য হইয় গেল। তখন কমল উঠিয়া মন্দিরের আড়ালে পাষণে লুটাইয়া পড়িয়া সকাতরে ডাকিল “আমার মনে বল দাও, হে ঠাকুর । আমায় ধবংস কবোনা । যে পথ দেখিয়েছ যেন সেই পথেই আমি থাকতে পারি।” ( & & ) সম্মুথে পাশ্বে পুস্তকের রাশি, সজ্জিত মুখাসনে সমাসীন সত্য পাঠনিরত। মুক্ত জানালা মধ্য দিয়া রাজধানীর বিচিত্র দৃশ্য চলন্ত চিত্রের দ্যায় ক্ষণ পরিবৰ্ত্তিত হইতেছিল ; মহামূল্য গৃহসজ্জায় সুসজ্জিত, আসনে বসনে আধাবে ভিত্তিতলে প্রাচীরে গৃহের সর্বত্র সৌধীনতা, সুরুচি ও ধনশালিতা ব্যক্ত হইতেছে, কিন্তু পাঠশাল ছাত্রের এ সব দিকে লক্ষ্য মাত্র নাই ; গভীর মনোযোগের সহিত সে পাঠে নিবিষ্টচিত্ত। পিছন হইতে একটি অতি সুন্দর তরুণ মুখ হাসির আলোয় মাখামাথি হইয় ফুটিয়া উঠিল, কানের কাছে সেই হাসিভরা গোলাপী অধর দুখান নামিয়া আসিল, কিন্তু তাঙ্কার কৌতুক মধ্যপথে বাধা প্রাপ্ত হইল, “ছিঃ গৌরি ” সত্য মুখ তুলিল। “ছিঃ কিসে ?” .