পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৫৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শান্তি আমার পয়সা কড়ির অভাব ছিল না । কিন্তু বুদ্ধিব দোষে সে সবই হারাইলাম— টাকা কড়ি, বিষয়-সম্পত্তি সব গেল। আমি এখন একেবাবে নিঃস্ব । এখানে থাকিয়া আর ফল কি ! শুধু বিড়ম্বন বই ত নয়। একদিন নিশাশেষে বাহির হইলাম ; ঠিক করিলাম, সমস্ত পৃথিবীটা ঘুবিয়া দেখি, কোথাও শাস্তি পাই কি না । অনেক দেশ বিদেশ ঘুবিলাম। কিন্তু শাস্তি কৈ ? যাঙ্গাব সন্ধানে জীবনপাত করিতেছি, সে কোথায় ? তখন শীতকাল ; বরফ পড়িতেছে। বাতাসেৰ বেগও প্রচণ্ড ; পত্রহীন গাছগুলা হি হি কবিয়া কঁাপিতেছিল। চারিদিকে তুষার, সমস্ত শুভ্ৰ ! আমারও শীত করিতেছিল। তবু ভাল ! দুবে আলো দেখা যাইতেছে। আলো লক্ষ্য করিয়া অগ্রসব হইলাম । সম্মুখে একটা মস্ত বাড়ী । দরজাব কাছে একটা ছোট ছেলে খেলা করিতেছে। “আমি আজ এখানে থাকব, ভাই ?” বালক বিঘ্নিত হইয়া আমার দিকে চাহিল—বোধ হয় ভয় পাইয়াছিল। কহিল, “আমি ত জানি না ; ঐ ঘবে দাদা পড়চে, তাকে জিজ্ঞেস ক’ব ।” ঘরে ঢুকিলাম—টেবিলের উপর বাতি জালাইয়া এক যুবক পাঠে নিবিষ্ট । “মশায়—” যুবক ফিরিল। “আজ অনুগ্রহ কবে যদি আমাকে—” “সে কথা বাবাকে বলুন গে। তিনি বারান্দায় বসে আছেন—এই দিকে” বtর নদীয় গেলাম। দীর্ঘশ্মশ্র এক বৃদ্ধ বসিয়া তামাক টানিতেছে। “কি চান ?” “আজ রাত্তিরের মত—”

  • আই ঘবে বাবা আছেন ; তাকে বলুন, তিনিই এ বাড়িব কৰ্ত্তী”

ঘবে ঢুকিয় দেখিলাম, দূরে খাটের উপর এক অতি জরাজীর্ণ বৃদ্ধ শয়ন কবিয়া আছে ; সে জীবিত কি মৃত তাহ ঠিক করিবার উপায় নাই । “মশায়” ? অতি ক্ষীণ স্বরে উত্তর আসিল, “আজ্ঞে"? “আমি আজ এখানে—” “সে কথা আমাকে বলচেন কেন ? বাড়ির কৰ্ত্তা বাবা ; তাকে বলুন । তিনি ঐ ঘরে রয়েচেন ।” পাশের ঘবে গেলাম। শিকেয় টাঙানো একটা দোলনার উপব এক অতি বৃদ্ধ শুইয়৷ ঠক্‌ ঠক্‌ করিয়া কঁাপিতেছে। বক্ষম্পন্দনের সঙ্গে সঙ্গে তাহার সমস্ত শরীর নড়িয়া নড়িয়া উঠিতেছে ; শরীরের চৰ্ম্ম লোল; নাড়া দিলে হাড় কথান খুলিয়া ছত্রভঙ্গ হইয়া যাইবে বলিয়া বোধ হয়। “মশায়, আমাকে আজ—” বৃদ্ধ অনেক কষ্টে অঙ্গুলি সঙ্কেতে পাশের ঘর দেখাইল ।