পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৫৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

శ్రీశ్రీe এতদিন চারিদিকে বিচ্ছিন্ন ও বিক্ষিপ্ত ছিল। আজ ফুলগুলিকে মালায় গাঁথিতে দেখিয়া আমরা অত্যন্ত আনন্দিত হইয়াছি। রামেন্দ্র বাবু তাছার প্রগাঢ় পাণ্ডিত্য ও চিন্তার ফল কতকগুলি প্রবন্ধে প্রকাশ করিয়া বঙ্গভাষাব শ্ৰীবৃদ্ধি করিয়াছেন। র্তাঙ্গার বৈজ্ঞানিক ও দার্শনিক প্রবন্ধ গুলি পাঠ করিলে মোহিত হইতে হয় । বৈজ্ঞানিক ও দার্শনিক তত্ত্ব অধিকাংশ স্থলে অতি স্থঙ্ক ও জটিল এবং সেই তত্ত্ব গুলি সহজভাবে ব্যক্ত করা অত্যন্ত দুরূহ। কিন্তু রামেন্দ্র বাবুর লেখনী-মুখে সেই অতি জটিল তত্ত্বও সহজ, সরস ও সুবোধ্য হইয়া উঠিয়াছে। “চরিত-কথায়” বিদ্যাসাগব, বঙ্কিমচন্দ্র, মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ, হেলম্ হোলৎজ, মোক্ষমূলর প্রভৃতি পুণ্যশ্লোক ব্যক্তির চরিত্র বিশ্লেষিত হইয়াছে। আমরা ইতিপূৰ্ব্বে বিদ্যাসাগৰ, বঙ্কিমচন্দ্র প্রভূতির বহু চরিত-কথা পাঠ করিয়াছি। কিন্তু রামেন্দ্র বাবুব চরিত-কথায় একটা বিশেষত্ব আছে। ইহাতে উপাখ্যান নাই ; বহি জীবনের বাহ কাহিনী নাই। ইহাতে আছে, অন্তঃ-প্রকৃতির কথা, ইহাতে আছে সুনিপুণ মানব-চরিত্র-বিশ্লেষণ। ইহাতে কাহার চরিত্র কি ধাতুতে গড়া, কাহার চরিত্র কি বিশেষত্বের পরিচয় দেয়, তাহার বিশ্লেষণ দেখিতে পাওয়া যায়। যদিও “বাকানল আর টেই টিউব হাতে দিয়া নানা জাতি কিন্তুত কিমাকার দ্রব্যের বিশ্লেষণ” সাধারণতঃ করিয়া থাকেন, তথাপি মানব চরিত্র-বিশ্লেষণে তিনি যে শিক্ষা ও দক্ষতার পরিচয় দিয়াছেন, তাহা বঙ্গসাহিত্যে বিরল। ভারতী রামেন্দ্র বাবু চৈত্র, ১৩২০ “কৰ্ম্ম-কথায়” গ্রন্থকার কতকগুলি দার্শনিক প্রবন্ধ সন্নিবেশিত করিয়াছেন। প্রবন্ধগুলি হইতে অসাধারণ পাণ্ডিত্য, গভীব গবেষণা, এবং প্রাচ্য ও প্রতীচ্য জ্ঞানের অপূৰ্ব্ব সমন্বয়ের একাধারে পরিচয় পাওয়া যায় । যদিও প্রবন্ধগুলি ভিন্ন ভিন্ন সময়ে প্রকাশিত হইয়াছিল, তথাপি এগুলি একই স্বত্রে বাধা । “কুৰ্ব্বন্নেবেহু কৰ্ম্মনি জিজী বিষেৎ শতং সমাঃ" এই বাক্যকে গ্রন্থকার ভিত্তিস্বরূপ গ্রহণ করিয়া প্রবন্ধগুলিকে দাড় করাইয়াছেন । কৰ্ম্ম-পরিত্যাগে মনুষ্যের ক্ষমতা নাই, অধিকারও নাই, ইহাই গ্রন্থকারের মুখ্য বক্তব্য। জ্ঞান হইতে দুঃখেব উৎপত্তি যেমন কোন কোন সমাজে প্রচলিত ধৰ্ম্মতত্ত্বের ভিত্তি,— জ্ঞানের পূর্ণতায় দুঃখের বিনাশ, সেইরূপ অন্ত সমাজে প্রচলিত ধৰ্ম্মতত্ত্বের মূল । জ্ঞান হইতে দুঃখের উৎপত্তি স্বীকার করিয়া লইয়া, জ্ঞানের পথ রুদ্ধ করিলেই—সেই দুঃখ হইতে নিস্কৃতি লাভ ঘটিবে, এই বিশ্বাসে কতক মনুষ্য বহু যুগ ধরিয়া প্রতারিত হইয়াছে। জ্ঞানের পন্থ পরিহার করিয়া দুঃখ-নাশের উপায় অন্বেষণ করিতে হইবে, সৌভাগ্যক্রমে সৰ্ব্বত্ৰ সৰ্ব্ব জাতির মধ্যে এই বাক্য স্বীকৃত হয় নাই। জ্ঞানের পূর্ণ বিকাশে দুঃখের ধ্বংস হয়, এই মত আবার একটা বৃহৎ সমাজে গৃহীত হইয়াছে। কিন্তু জ্ঞান হইতেই এই সুখ-দুঃখময় জগতের উৎপত্তি হইয়াছে। এই জগতের উৎপত্তির সহিত দুঃখের উৎপত্তি ও মুখের উৎপত্তি ছুইয়াছে। এই জগতেব দুঃখভোগ